সন্দ্বীপ গ্রমীণ জনপদের যাতায়াতের জনগুরুত্বপুর্ণ কাচা ও পাকা সড়ক গুলো দিয়ে অবৈধভাবে বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে স্যালো ইঞ্জিন চালিত ট্রলি ও ভটভটি ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে চলাচল করায় সর্বসাধারনের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। যে কোন মুহুর্তে মারাত্নক দূর্ঘটনায় প্রাণহানিকর ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
সন্দ্বীপের প্রধান সড়কে চোখ রাখলেই দেখা যাবে শ্যালো ইঞ্জিন চালিত অবৈধ যান বাহন চলাচলের আধিপত্য। যানজট থেকে শুরু করে দুর্ঘটনার প্রধান কারন হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এইসব পরিবহনকে। লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা পরিচালনা করলেও শুধূ মাত্র খরচের অযুহাত দেখিয়ে পণ্য সরবরাহের কাজে এ সকল অবৈধ যান গুলো বেশি ব্যবহার করে থাকেন। এমনকি ইট ভাটার মালিকরা কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ব্যবসা পরিচালনা করলেও তারাও এ সকল অবৈধ যানবাহনের মাধ্যমে ইট সরবরাহ করে থাকেন। ফলে সর্বত্রই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এ সকল অবৈধ যান বাহন চালালেও প্রশাসনিকভাবে এদের বিরুদ্ধে তেমন কোন ব্যবস্থা নিতে চোখে পড়ে না। এভাবে চলতে থাকলে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলবে।
রীতিমত গণউপদ্রুব চলছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। মার্কেট ভবন নির্মাণের জন্য খোড়া গর্তের কাদা-মাটি ইতস্তত বিক্ষিপ্তভাবে পাকা রাস্তার উপর ফেলে যাচ্ছে ট্রাক, ট্রলি, ট্রাক্টরসহ ইঞ্জিন চালিত বিভিন্ন যানবাহন। বিশেষ করে ইটভাটায় ব্যবহৃত মাটি বহনের যানবাহনগুলো সারা পাকারাস্তা জুড়ে কাদা-মাটি ছড়িয়ে যাচ্ছে। সাদা চোখে অপরাধটা খুব ছোট হলেও এর শিকার রাস্তায় চলাচলকারী সকল শ্রেণির মানুষ। রাস্তার উপর পড়ে থাকা কাদা-মাটি ভোরের কুয়াশার সাথে মিশে রাস্তায় পিচ্ছল করে তুলছে। ফলে সাইকেল মটর সাইকেলসহ পায়ে চলা দুস্কর হয়ে পড়ছে। আর বেলা বাড়ার সাথে সাথে ঐ কাদা-মাটি রোদে শুকিয়ে তীব্র ধুলার সৃষ্টি করছে। ফলে ঐ রাস্তা দিয়ে ধুলা না মেখে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। বেশ কিছুদিন ধরে সন্দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় এই গণউপদ্রুপ অব্যাহতভাবে চললেও প্রতিকারের কোন লক্ষণ নেই।
ইটভাটায় মাটি আনা-নেয়ার কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টরের ট্রলি আর ইঞ্জিন ট্রলির রাস্তায় চলাচল এতটাই দ্রুতগতির যে পথচারীরা আতংকে থাকেন স্বাভাবিক চলাফেরায়। শুধু তাই নয়, চলন্ত ট্রলি থেকে মাটি পড়ে পিচঢালা রাস্তা যেমন মাটি-কাদায় পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে তেমনি ইটের সোলিং রাস্তা ও মাটির রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। এসকল যানবাহন চলাচলে সুনির্দিষ্ট কোন নীতিমালা কিংবা নিয়মনীতি না থাকায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনও পড়ছেন বিপাকে। আবার কতিপয় প্রভাবশালীদের সন্তুষ্ট করে দেদারছে চলছে ইটভাটা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মযজ্ঞ। যেন দেখার কেউ নেই। তবে ট্রাক্টরের ক্ষেত্রে বিআরটিএ’র রেজিস্ট্রেশনসহ আনুষাঙ্গিক কাগজপত্র থাকার কথা থাকলেও বেশির ভাগ ইটভাটায় নিয়োজিত ট্রাক্টরগুলোর নূন্যতম কোন বৈধতা নেই। আর স্থানীয় পর্যায়ে তৈরিকৃত শ্যালো-ইঞ্জিনের ট্রলির ক্ষেত্রে তো কথা-ই নেই, তারা যেনো মগের মুল্লুকের বাদশা। পথচলার ক্ষেত্রে রাস্তাটা শুধু নিজেদেরই মনে করে এমনভাবে চলে যে অন্য যানবাহন বা পথচারীরা প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়ছেন। ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনাও। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগামী শিক্ষার্থীরা থাকে সবসময় আতংকে।
এছাড়া পথচারী, শিশু, শিক্ষার্থী স্কুলগামী সন্তানদের নিয়ে অভিভাবক গণ চরম উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় রয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব যানবাহনের কোন রকম রুট পারমিশন নেই। তারপরেও লাইসেন্স বিহীন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও অদক্ষ চালকেরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নাকের ডগার উপর দিয়ে উপজেলা সন্দ্বীপের ব্যস্ততম বিভিন্ন সড়ক গুলো দিয়ে অবাধে এসব যানবাহন চলাচল করছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব যানবাহনের চলাচলের দৃশ্য দেখেও তারা রহস্যজনক ভাবে অজানার ভান করছেন। তাদের এমন মৌন ভুমিকা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে , সন্দ্বীপের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যস্ততম পাকা ও মেটো পথ গুলো দিয়ে দিবারাত্রি প্রতিনিয়তই এসব ভটভটি ও ট্রলিতে করে ধারন ক্ষমতার অতিরিক্ত বালি, ইট, মাটি, রড, সিমেন্ট সহ নানা ধরনের পণ্য সামগ্রী বিভিন্ন স্থানে নির্বিঘে বহন করা হচ্ছে। বিদ্যমান এ পরিস্থিতিতে বিশেষ করে অধিকাংশ গ্রামীন কাচা সড়ক গুলোর কোন কোন জায়গায় দুই ধার ধসে পড়ে অসংখ্য খানা খন্দে ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে।
শুধু তাই নয় এ সড়ক গুলোর উপর দিয়ে এমন সব ভারী যানবাহন যত্রতত্র ভাবে চলাচল করায় কোথাও কোথাও বিশাল আকারে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে যে কোন মুহুর্তে সড়কটি ভেঙ্গে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়বে বলে ভুক্তভোগি সচেতন জনগণ আশঙ্কা করছেন। তারা আরও বলেন বিশেষ করে বর্ষাকাল শুরু হলে সড়ক গুলোতে পানি জমে থাকায় প্রায় পুরো বর্ষা মৌসুম জুড়ে কর্দামাক্ত হয়ে থাকে। এতে অবহেলিত এ সড়ক গুলো চলাচলের জন্য একেবারে অযোগ্য হয়ে পড়ে।
এ সময় আমরা নিভূত অঞ্চলের মানুষজন ও রিক্সভ্যান, বাইসাইকেল ও মোটর সাইকেল সহ সকল প্রকার যানবাহন চলাচলে চরম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়।
এমনকি ওই সময়ে পাঁয়ে হেঁটে চলাচলো অনেকটা দুস্কর হয়ে পড়ে বলে জানান। উপজেলার জন সাধারণ ও স্কুলগামী শিশু শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা বলেন, যেভাবে রাস্তা দিয়ে ভটভটি ও ট্রলি গুলো চলাচল করে এতে ছেলে মেয়েদের কে একায় স্কুল পাঠাতে খুব ভয় হয়। এ কারণে তারা নিজেদের দায়িত্বেই সস্তানদের স্কুলে নিয়ে যাওয়া আসা করেন বলে জানা গেছে।
এদিকে সন্দ্বীপের ভিবিন্ন এলাকার পথচারী অনেকে বলেন মাঝে মধ্যে ভটভটি ও ট্রলি গুলো যেভাবে জোরে সোরে চালায় এতে কখন যে কি ঘটবে তা বলা যাবে না। এজন্য আমরা হাঁটা চলার সময় ভয়ে খুব সাবধানতার সাথে ও অতি সতর্ক ভাবে চলাচল করে থাকি।
এ পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগিদের দাবী সর্বসাধারনের জান মাল রক্ষার্থে অনতিবিলম্বে এসব যানবাহন বন্ধ করতে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পুলিশ প্রসাশনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।