জেলা প্রতিনিধি ঃমুজিবুর রহমান
হবিগঞ্জ শহরসহ আশপাশের উপজেলায় বেশ কিছুদিন ধরে টানা তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। এরমধ্যে দু-একদিন ছিটেফোঁটা পড়েছে তবে সেভাবে বৃষ্টি হয়নি। অবশেষে নেমেছে ঝড়-শিলা বৃষ্টির তান্ডব। এতে তীব্র গরমে স্বস্তি এলেও বেড়েছে অস্বস্থি। ব্যাপক শিলাবৃষ্টিতে ঘরবাড়ি, গাছপালা, যানবাহন ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন।
শহরে মাত্র ২৫ মিনিটের ঝড় শিলাবৃষ্টিতে তচনছ হয়েছে বেশ কয়েকটি পাড়া মহল্লা। এছাড়াও শিলার আঘাতে অন্তত ১০টি টমটম অটোরিক্সার অংশ ভেঙে গেছে। এতে চালক পথচারী ও যাত্রীসহ অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে টমটমের যন্ত্র ভেঙে আব্দুল আজিজ (৩৫) নামে এক চালক গুরুতর আহত হয়েছে। তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আহত টমটম চালক আজিজ শহরতলীর বড় বহুলা গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে ঝড় শুরু হলেও ৩টা থেকে শুরু হয় শিলা বৃষ্টি। চলে ৩টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত। মাত্র ২৫ মিনিটের ব্যাপক শিলাবৃষ্টিতে ভেঙে যায় শহরের অনেক গাছপালা। উপড়ে যায় টিনের চালাও। তবে এর মধ্যে সবছেয়ে বেশি গ্রস্থ হয়েছে টমটম অটোরিক্সা চালকরা। বড় বড় শিলার আঘাতে অন্তত ১০টি টমটম অটেরিক্সার গøাস ভেঙে গেছে। এছাড়াও শহরসহ শহরতলীর আশপাশের ফসল ও শাকসবজি ক্ষেতের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। একই ভাবে বাহুবল উপজেলারও বেশ কিছু স্থানে শিলা বৃষ্টি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
আহত টমটম চালক আব্দুল আজিজ জানান, আমি থানার মোড় থেকে যাত্রী নিয়ে তিনকোনা পুকুরপাড় পৌছামাত্র ব্যাপক শিলাবৃষ্টির কবলে পরি। শিলার তীব্রতা এতটাই ছিল যে আমিসহ যাত্রীরা টমটম থেকে নামার সুযোগ টুকুও পাইনি। এক পর্যায়ে বড় বড় কয়েকটি শিলা টমটমের সামনের গøাসে আঘাত করলে গøাসটি ভেঙে যায়। আর গøাসের টুকরো আমার পায়ে গিয়ে আঘাত করে। এতে আমি আহত হই। তিনি বলেন, একেকটি শিলার ওজন ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ গ্রাম হবে। এত বড় শিলা আমি আমার জীবনে দেখেনি। আহত পথচারী এমরান আহমেদ বলেন, হঠাৎ করে ঝড়ো বাতাসের সাথে শিলা বৃষ্টি শুরু হয়। একটি শিলা আমার মাথায় পড়লে আমি আহত হই।
ব্যবসায়ী জাকারিয়া আহমেদ বলেন, এত বড় বড় শিলা আমি আগে কখনো দেখিনি। শিলার আঘাতে টিনের চালা অনেক স্থানে চিদ্র হয়ে গেছে। অনেত পথচারী শিলা থেকে বাচতে আমার দোকানে এসে আশ্রয় নিয়েছে। তিনি বলেন, ঝড়ো বাতাস আর শিলার কারণে শহরের অনেক স্থানে গাছপালা উপড়ে গেছে। রিক্সা চালক ছালেক মিয়া জানান, শিলার তীব্রতা খুভই বেশি ছিল। তিনি বলেন, শিলার সময় রিক্সা রাস্তার এক পাশে রেখে আমি কোনমতে একটি দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেই।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, হবিগঞ্জ সদর ও বাহুবল উপজেলায় শিলাবৃষ্টির খবর পেয়েছি। তিনি বলেন, আমি আমার অফিসারদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানতে নির্দেশ দিয়েছি। তিনি বলেন, জেলাজুড়ে ইতোমধ্যে ৭২ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে।