১৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ| ১লা জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ| ১২ই জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি| সন্ধ্যা ৬:১৫| গ্রীষ্মকাল|
Title :
টাঙ্গাইলে প্রশংসায় ভাসছে জননেতা তারেক শামস্ খান হিমুর ব্যতিক্রমী প্রচারণা টাংগাইলের নাগরপুরে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন বারবাজার ইউনিয়ন পরিষদের উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা করেন আবুল কালাম আজাদ পূর্বধলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেপ্তার আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রচারণা এবং জনপ্রিয়তার শীর্ষে জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ঝুমা তালুকদার কোলা ইউনিয়ন পরিষদে যক্ষা ম্যালেরিয়া কোভিড-১৯ বিষয় নিয়ে আলোচনা সভা মদনে হাতি দিয়ে চলছে রাস্তায় চাঁদাবাজি কিশোরীর স্মরণে ১৯৭১ সন -মুক্তিকামী মানুষ লড়ছে -স্বাধীনতার জন্যে আর হানাদার দানব পিশাচ ঘুরছে খুন ধর্ষণ রক্ত ঝরাতে টাংগাইল জেলা আ’লীগের নেতার মৃত্যুতে নাগরপুর উপজেলা আ’লীগের শোক তারাকান্দায় জিয়াউর রহমানের ৪২তম শাহাদাত বার্ষিকী পালিত

আজকের এই দিনে লাকসাম থেকে হানাদার বাহিনী পালিয়ে গিয়েছিল।

মোঃ ইকবাল মোরশেদ ;': স্টাফ রিপোর্টার
  • Update Time : শনিবার, ডিসেম্বর ১১, ২০২১,
  • 41 Time View

আজ ১১ ডিসেম্বর লাকসাম হানাদার মুক্ত দিবস। দীর্ঘ নয় মাস প্রতিরোধের মুখে ৮ ডিসেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকবাহিনী পিছনে হটে যায় এবং ১১ ডিসেম্বর বৃহত্তর লাকসাম অঞ্চল পাকহানাদার মুক্ত হয়।

একাত্তোরের মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনীর নিষ্ঠুর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের একমাত্র স্মৃতি লাকসামের বেলতলী বধ্যভূমি।
৭১’র যুদ্ধকালীন সময়ে কুমিল্লা জেলার লাকসাম রেলওয়ে জংশনের দক্ষিনে বেলতলীতে কয়েক হাজার বাঙ্গালীকে নির্মমভাবে হত্যার পর লাশ মাটি চাপা দিয়েছিল সেই পাকহানাদার বাহিনী।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী লাকসাম রেলওয়ে জংশন থ্রী-এ সিগারেট ফ্যাক্টরীতে ঘাঁটি করে। এ ঘাঁটিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারন মানুষ এবং

অসংখ্য মা বোনকে ধরে এনে দল বেঁধে ধর্ষণ করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে, নির্বিচারে হত্যা করে
এর ৫’শ গজ দূরে বেলতলী বধ্যভূমিতে মাটি চাপা দিয়েছিল ওই পাকহানাদার বাহিনী ।

পাক সেনাদের নিষ্ঠুর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের নিরব স্বাক্ষী লাকসাম রেলওয়ে জংশন কলোনীর শ্রীধাম চন্দ্র দাশ, তার মামা সুরেন্দ্র দাস ও উপেন্দ্র দাস জানায়,
নিজেদের জীবন বাঁচাতে ওইসময় সিগারেট ফ্যাক্টরী থেকে তারা নারী পুরুষের কয়েক হাজার লাশ নিয়ে বধ্যভূমিতে গর্ত করে মাটি চাপা দিয়েছে। এ বধ্যভুমিতে মাটি খুঁড়লেই সন্ধান মিলবে কয়েক হাজার বাঙ্গালীর হাঁড়-কঙ্কাল।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানায়, যুদ্ধের প্রথম সাপ্তাহে পাকবাহিনীর সঙ্গে সন্মুখ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাসহ বহু লোক নিহত হয়।

এদের মধ্যে মোস্তফা কামাল ও সোলায়মান নামে দুই ভাই, মিশ্রীর আবদুল খালেক, কামড্ডা গ্রামের আবুল খায়েরের স্মৃতি এখনও ভূলতে পারছেনা তারা।

বাঙালী জাতির গৌরবোজ্জল মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মাসের শুরু ১৯৭১ সালের এ মাসে বাঙালী জাতির জীবনে নিয়ে এসেছিল এক মহান অর্জনের আনন্দ।
৭১’র এ মাসেই পরাধীনতার শৃংখল থেকে মুক্ত হয় এ অঞ্চল। পাক লোকজনের সু-দীর্ঘ ২৩ বছরের শোষন-বঞ্চনা আর অত্যাচার-নির্যাতনের কবর হয় বিজয়ের মধ্যে দিয়ে। পাকবাহিনীর কবল থেকে স্বাধীনতাকামী মুক্তিযোদ্ধারা

এ দিনে লাকসাম হাইস্কুল মাঠে তৎকালীন ছাত্রনেতা মরহুম নজির আহমেদ ভুঁইয়া প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করেন।

দিবসটি পালন উপলক্ষে জেলা দক্ষিনাঞ্চলের ৫টি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী সংগঠন নানাহ কর্মসূচী হাতে নিয়েছে।
আগামী দিনে তরুন প্রজন্ম যাতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সঠিক ভাবে অবহিত হতে পারে এবং স্বাধীনতা বিরোধী চক্র কোনদিন ইতিহাস বিকৃতি করতে না পারে সে জন্য প্রতিটি জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রহশালা স্থাপনের কোন বিকল্প নেই।
তাহলেই শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা-শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকার-আলবদরদের চূড়ান্ত তালিকা সংরক্ষন করা সম্ভব বলে দাবী স্থানীয় একাধিক মুিক্তযোদ্ধাদের।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সু-সংগঠিত করা এবং সুষ্ঠভাবে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য বৃহত্তর লাকসামকে ৪টি সেক্টরে ভাগ করা হয়।
৪টি সেক্টরের যুদ্ধকালীন কমান্ডার হিসাবে মোঃ আবু তাহের মজুমদার মৃত সাবেক চেয়ারম্যান, মোঃ ছায়েদুল ইসলাম মৃত সাবেক চেয়ারম্যান পেরুল ইউনিয়ন, এড. আবুল বাশার ও মোঃ আবদুল মালেক দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি এ অঞ্চলের চারিদিকের সীমানা নিয়ে গঠিত ৪টি সেক্টর কমান্ডের সাথে একাধিক প্লাটুন মানুষ গেরিলা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন।

লাকসামের উত্তরে বিজয়পুর (বর্তমান সদর দক্ষিণ উপজেলা), পশ্চিমে চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলা, দক্ষিণে নোয়াখালী জেলার বর্তমানে সোনামুড়ি উপজেলা এবং পূর্বে বর্তমান চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ভারত সীমান্ত ছিল এ অঞ্চলের যুদ্ধকালীন এলাকা। যুদ্ধকালীন সময়ে বিভিন্ন বিগ্রেডে ৪’শ ৭২ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম থাকলেও স্বাধীনতার ৪৬ বছরে শুধু দীর্ঘ হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা।

১৯৭১ সালের এ মাসেই শুরু হয় পাক সেনাদের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ শুরু করলেই পাল্টা প্রতিরোধে ঝাপিয়ে পড়ে এ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় আম-জনতা। দীর্ঘ ৯ মাস যূদ্ধ শেষে কয়েক হাজার মানুষের রক্ত এবং কয়েক’শ নারীর ইজ্জতের বিনিময়ে এ মাসেই পান বিজয়ের স্বাদ। ১১ ডিসেম্বর মুক্ত হয় লাকসাম। বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে উপজেলা
প্রশাসন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও বিভিন্ন সংগঠন কর্মসূচীর আয়োজন করেছে।এ দিকে প্রায় ২ হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে বধ্যভূমিটির উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এটি রাষ্ট্রীয় ভাবে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

More News Of This Category