বরিশাল নগরের প্রাণ-প্রকৃতির আঁধার কীর্তনখোলা নদীর তলদেশে পুরু পলিথিনের স্তরের অস্তিত্ব মিলছে কয়েক বছর ধরে। এটা এক ভয়ানক বার্তা। বরিশালে ‘একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক-পলিথিন ব্যবহার রোধে আদালতের রায় বাস্তবায়ন: বিকল্প ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণ’ শীর্ষক এক নাগরিক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেছেন।
বক্তারা বলেন, প্লাস্টিক-পলিথিনের যথেচ্ছ ব্যবহারে সারা বিশ্বের পরিবেশ-প্রতিবেশ, মাটি–পানির জন্য একটি মারাত্মক হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্লাস্টিকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার ও বর্জ্য অব্যবস্থাপনার কারণে কৃষিজমি, পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা, নদীনালা, খাল–বিলসহ পরিবেশ ও প্রতিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বক্তারা বলেন, ব্যবহার শেষে পলিথিনের ব্যাগ রাস্তাঘাট, নালা-নর্দমা, নদী-খালে বিক্ষিপ্তভাবে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। জমাকৃত পলিথিন ও অপচনযোগ্য পণ্য নালায় আটকে গিয়ে তরল বর্জ্য প্রবাহ বন্ধ করে দেয়। বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার মূল কারণ হচ্ছে যত্রতত্র পড়ে থাকা এই পলিথিন ব্যাগ। এ জন্য প্লাস্টিক ও পলিথিনের মতো পরিবেশঘাতী দ্রব্য ব্যবহার বন্ধ করার উদ্যোগ নিতে হবে। এ বিষয়ে আদালতের রায় বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন তাঁরা।
বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এই নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয় এই সংলাপের আয়োজন করে।
অধ্যাপক গাজী জাহিদ হোসেন সংলাপে সভাপতিত্ব করেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী বায়োকেমিস্ট মো. মুন্তাসির রহমান। সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেলার বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী লিংকন বায়েন।
বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পলিথিনের ব্যবহার রোধে আইন প্রণয়ন করা হলেও পলিথিনের উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, মজুত, বিতরণ ও ব্যবহার থেমে নেই। এ জন্য সবার আগে কারখানা, যন্ত্রপাতি জব্দ করার পাশাপাশি দেশব্যাপী নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানানো হয়।
একই সঙ্গে প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে বাঁশের সামগ্রী, স্টেইনলেস স্টিল, কাঠের সামগ্রী, বহুবার ব্যবহারযোগ্য শপিংব্যাগ, পাতার তৈরি সামগ্রী, মৌমাছির মোমের তৈরি সামগ্রী, মাটিও পাটের তৈরি সামগ্রী ও বায়োপলিমার ব্যবহারের পরামর্শ দেন তাঁরা