এ,জেড,এম উজ্জ্বল ; পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি।।
বাবার ষ্ট্রোক ও মন গলাতে পারেনি কলেজ অধ্যক্ষ’র। তাঁর সাফ কথা প্রবেশ পত্র নিতে হলে ১২০০ টাকা দিতে হবে। এতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দরিদ্র কামাল তালুকদার’র চিকিৎসা খরচ মেটাতে হিমশিম দরিদ্র পরিবারটির কন্যা, কলাপাড়া মহিলা কলেজ’র কলা অনুষদের পরিক্ষার্থী মোসা: জান্নাতুল শিফা কান্না জুড়ে দেন। কলেজ ক্যাম্পাসে একজন শিক্ষার্থীর এমন কান্নার দৃশ্য দেখে শিক্ষকরা তার প্রবেশ পত্র বিনামূল্যে তাকে দিতে বললে অধ্যক্ষ ধমক দেন ওই সব শিক্ষকদের। এছাড়া ২০২০ সালে করোনায় অটোপাশ শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট বিতরনে নেয়া হয় ১৫০০ টাকা হারে। সার্টিফিকেট প্রদানে টাকার রশিদ দিলেও প্রবেশ পত্র বিতরনে টাকার রশিদ দেয়নি কলেজ। অভিভাবকরা এ সম্পর্কিত অভিযোগ মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের , বরিশাল অঞ্চলে’র পরিচালককে জানালে তিনি এইচএসসি পরিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া টাকা ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাদের ফেরৎ দিতে নির্দেশ দেন অধ্যক্ষকে। জানা যায়, ২রা ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়া ২০২১ সালের কলা, বানিজ্য ও বিজ্ঞান অনুষদের তিনটি বিষয়ের ১৫৯ এইচএসসি পরিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১২০০ টাকা হারে ১ লক্ষ ৯০ হাজার ৮০০ এবং ২০২০ সালের অটো পাশকৃত ১৬৯ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১৫০০ টাকা হারে ২ লক্ষ ৩৮ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন ফারুক। অধ্যক্ষ’র নির্দেশেই এ টাকা আদায় করেন করনিক জসিম উদ্দীন। যার সিংহ ভাগ কলেজ অধ্যক্ষ নিয়ে বাকীটা ভাগা ভাগি করে দেন ক’জন প্রভাবশালী শিক্ষকদের মধ্যে। যারা প্রতিবছর থাকেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রন কমিটি সহ কলেজের সকল কমিটিতে। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ উঠলে শুক্রবার বিকেলে জরুরী বৈঠকে বসেন কলেজ অধ্যক্ষ। এরপর বৈঠক করে কলেজ পরিচালনা পরিষদ। কিন্তু কোরাম সংকটে সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় ওই বৈঠক। কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. বাহাউদ্দিন বলেন, ’অধ্যক্ষ সাহেব ফোন করে জানিয়েছেন যে কলেজ মেইনটেন্যান্সের জন্য এডমিট বিতরনের সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কিছু টাকা নিবেন। তবে সেজন্য ১২’শ টাকা হারে আদায় করবেন তা আমার জানা ছিল না।’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা, বরিশাল অঞ্চলের পরিচালক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হওয়ার পর কলেজ অধ্যক্ষকে শিক্ষার্থীদের মাঝে ২৪ ঘন্টার মধ্যে টাকা ফেরৎ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ড’র পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন কুমার গাইন বলেন, ’আমি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করি। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা, বরিশাল অ ল’র পরিচালক এবং বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন। আপনি তাদের সাথে কথা বলেন।’
বরিশাল শিক্ষা বোর্ড’র চেয়ারম্যান মো: ইউনুস আলী বলেন, ’পরীক্ষার প্রবেশ পত্র বিতরনে কোন টাকা নেয়া যাবে না। এটি বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। তারপরও যদি কলেজ অধ্যক্ষ প্রবেশ পত্র বিতরনে টাকা আদায় করেছেন বলে প্রমান হয় তবে ওই কলেজের এমপিও বাতিলের সুপারিশ করা হবে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মহিলা কলেজ অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন ফারুক বলেন, ’মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা, বরিশাল অ ল’র পরিচালক মহোদয়ের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত নিতে বলা হয়েছে। আজ বিকেলে দু’জন এসে টাকা নিয়েছে। তারা এ মুহুর্তে আমার কাছে আছে, কথা বলতে পারেন।