লক্ষ্মীপুরে একটি হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ তুলে সেখানে ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ‘অব্যবস্থাপনা’ ও সিভিল সার্জন আব্দুল গাফফারের ‘অবহেলায়’ ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে তার স্বজনদের অভিযোগ।
মৃত প্রসূতির নাম শিমু আক্তার। তিনি সদর উপজেলার শাকচর গ্রামের লাভলুর স্ত্রী।
শনিবার সন্ধ্যায় শহরের ‘নিউ আধুনিক হাসপাতাল’ নামের একটি বেসকারি হাসপাতালের দরজা-জানালা ভাঙচুর করেন শিমুর স্বজনরা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মৃতের চাচাত ভাই আলাউদ্দিন জানান, শনিবার বিকালে শিমুর প্রসব ব্যাথা ওঠায় প্রথমে তাকে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে শিশুর অবস্থান ‘উল্টো’ ধরা পড়ে। পরে তাকে ‘নিউ আধুনিক’ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে বিকাল ৩টার দিকে শিমুর সিজার করানোর জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, “এ সময় সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল গাফফার শিমুর অস্ত্রোপচার করেন। কিছুক্ষণ পর শিমুর নবজাতককে স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর তিনি অন্য আরেক প্রসূতির অস্ত্রোপচার করতে চলে যান। কিন্তু শিমুর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে পরিবারের কাছে কিছু জানাচ্ছিলেন না তিনি।
“কিছুক্ষণ পর শিমু স্ট্রোক করেছে জানিয়ে চিকিৎসক আব্দুল গাফফার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিকাল ৫টার দিকে তাকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে কুমিল্লা মেডিকেলে পাঠিয়ে দেন। পরে সেখানে গিয়ে শিমুর মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন পরিবারের লোকজন। পরে তারা বিক্ষুদ্ধ হয়ে নিউ আধুনিক হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শিমুর মা জেসমিনের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ‘অব্যবস্থাপনায়’ ও ‘চিকিৎসকের অবহেলায়’ তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।
শিমুর খালাতো বোন শিউলি বলেন, “এনেস্থেশিয়া চিকিৎসক ছাড়াই অপারেশন করায় আমার বোনের মৃত্যু হয়েছে।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন তা অস্বীকার করে বলেন, “প্রেসার বেড়ে ‘স্ট্রোক করে’ রোগী মারা গেছে। এনেস্থেশিয়া চিকিৎসক ইকবাল ও নাছিম নামে দুইজনই অপারেশন থিয়েটারে ছিলেন।”
এ ঘটনায় জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তবে চিকিৎসক আনোয়ার হোসেনের কাছে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।”