১৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ| ৩১শে মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ| ১১ই জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি| সকাল ১০:০০| গ্রীষ্মকাল|
Title :
টাংগাইল জেলা আ’লীগের নেতার মৃত্যুতে নাগরপুর উপজেলা আ’লীগের শোক তারাকান্দায় জিয়াউর রহমানের ৪২তম শাহাদাত বার্ষিকী পালিত নোয়াখালীতে দুলাল মেম্বার হত্যাকান্ডের ঘটনায় মূল আসামী গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধার পূর্বধলায় ভূমি সেবা সপ্তাহ পালিত টাংগাইল জেলা আ’লীগের নেতার মৃত্যুতে জননেতা তারেক শামস্ খান হিমুর শোক সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে নাগরপুর উপজেলা বিএনপি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন ডিজিটাল প্রদর্শনীর মাধ্যমে জনগনকে দেখিয়ে পথসভা করছেন – এ আর খান আখির কালীগঞ্জ উপজেলার কোলা ইউনিয়ন পরিষদে টিসিবি পণ্য ডাল তৈল বিতরণ কিশোরগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় ইয়ামিন নামে ১ শিশুর মর্মান্তিক। ইতিহাস সৃষ্টি করলেন যুবলীগ সভাপতি টোকেন চৌধুরী

৩ই ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় ঠাকুরগাঁও, উত্তোলিত হয় লাল সবুজের পতাকা !!

মোহাম্মদ মিলন আকতার ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি
  • Update Time : শুক্রবার, ডিসেম্বর ৩, ২০২১,
  • 26 Time View

১৯৭১ সালের ৩ই ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয়েছিল ঠাকুরগাঁও। মুক্তিযোদ্ধাদের মরণপণ লড়াই আর মুক্তিকামী জনগণের দুর্বার প্রতিরোধে নভেম্বরের শেষ দিক থেকেই পিছু হটতে শুরু করে পাকিস্তানি সৈন্যরা।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতের পর সারাদেশের মতো ঠাকুরগাঁওয়ে পাকিস্তানি সৈন্যরা আক্রমণ করে। নিরস্ত্র বাঙালির ওপর চালায় নির্যাতন।
গ্রামে গ্রামে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠনে মেতে ওঠে তারা।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জাটিভাঙ্গা ও রানীশংকৈল খুনিয়াদীঘি পাড়ে মুক্তিকামীদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়।
মালদাইয়া বলে পরিচিত স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় হানাদার বাহিনী হরিপুর ও রানীশংকৈল উপজেলার নিরীহ লোকজনকে ধরে নিয়ে যেতো ওই পুকুরের পাড়ে। সেখানে একটি শিমুল গাছের সঙ্গে হাতে পায়ে লোহার পেরেক গেঁথে মুক্তিযোদ্ধাদের বর্বর নির্যাতন চালানো হতো।তারপর লাইন করে দাঁড় করিয়ে পাখির মত গুলি করে হত্যা করা হতো। মানুষের রক্তে এক সময় লাল হয়ে উঠে ওই পুকুরের পানি।
তাই পরবর্তীতে এ পুকুর খুনিয়াদিঘি নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। এভাবে তারা রুহিয়া রামনাথ হাট, ফারাবাড়ী রোড, ভাতারমারি ফার্ম, ভোমরাদহ ও বালিয়াডাঙ্গী এলাকায় গণহত্যা চালায়।
এদিকে ১৫ এপ্রিলের মধ্যেই আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হানাদার বাহিনীর দখলে চলে যায় ঠাকুরগাঁও। সংগঠিত হতে থাকে ঠাকুরগাঁওয়ের মুক্তিকামী মানুষরাও। তারা হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে গড়ে তোলে দুর্বার প্রতিরোধ।
ঠাকুরগাঁও তখন ৬ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত। কমান্ডার ছিলেন বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার এম খাদেমুল বাশার। ২৯ নভেম্বর এই মহকুমার পঞ্চগড় থানা প্রথম শত্রুমুক্ত হয়। পঞ্চগড় হাতছাড়া হওয়ার পর পাকবাহিনীর মনোবল ভেঙে যায়।
ভারতীয় মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ আক্রমণ শুরু হয়। ঠাকুরগাঁও অঞ্চলের মিত্রবাহিনী যাতে ঠাকুরগাঁও দখল করতে না পারে সেজন্য হানাদার বাহিনী ৩০ নভেম্বর ভূল্লী বিজ উড়িয়ে দেয়। তারা সালন্দর এলাকায় সর্বত্র বিশেষ করে ইক্ষু খামারে মাইন পুতে রাখে। মিত্রবাহিনী ভূল্লী ব্রিজ সংস্কার করে ট্যাংক পারাপারের ব্যবস্থা করে। ১ ডিসেম্বর ভূল্লী ব্রিজ পার হলেও যত্রতত্র মাইন থাকার কারণে ২টি ট্যাংক ধ্বংস হয়ে যায়, মিত্রবাহিনী ঠাকুরগাঁও শহরে ঢুকতে পারে না।
এরপর এফ এফ বাহিনীর কমান্ডার মাহাবুব আলমের নেতৃত্বে মাইন অপসারণ করে মিত্রবাহিনী ঠাকুরগাঁওয়ের দিকে অগ্রসর হয়। ২ ডিসেম্বর সারারাত চলে প্রচণ্ড গোলা-গুলি, পরে হানাদার বাহিনী ঠাকুরগাঁও থেকে পিছু হটতে থাকে। ৩ ডিসেম্বর ভোর রাতে শত্রুমুক্ত হয় ঠাকুরগাঁও। তখন মুক্তিযোদ্ধা ও সর্বস্তরের জনগণ মিছিলসহ ঠাকুরগাঁও শহরে প্রবেশ করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে দেয়। বিজয় ছিনিয়ে আনতে ১০ হাজার নারী পুরুষকে প্রাণ দিতে হয়, পাশবিক নির্যাতনের শিকার ২ হাজার মা-বোন।
৩ ডিসেম্বর সকাল থেকেই ঠাকুরগাঁও শহরে মানুষ জড়ো হতে থাকে। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় বের হয় আনন্দ মিছিল। জয়ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে এ অঞ্চলের জনপদ। হাজার হাজার মানুষ উদ্বেলিত কন্ঠে ‘জয় বাংলা’ বলতে বলতে মুক্ত শহরের রাস্তায় বের হয়ে আসে।
৩ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে ঠাকুরগাঁও হানাদার মুক্ত হয়। ঠাকুরগাঁয়ের সর্বস্তরের মানুষ এই দিনটিকে উদযাপন করে থাকেন।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো সংরক্ষণ করা হয়নি অনেক গণকবর। আর যেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে তাও পড়ে আছে অবহেলা আর অযত্নে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

More News Of This Category