ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ত্রিলোচনপুর ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়ী নজরুল ইসলাম ওরফে ঋতু হিজড়াঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ত্রিলোচনপুর ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়ী নজরুল ইসলাম ওরফে ঋতু হিজড়া
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন নজরুল ইসলাম ওরফে ঋতু হিজড়া। তিনি নৌকার প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ওরফে ছানার চেয়ে দ্বিগুণ ভোট পেয়েছেন। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
আজ রোববার ত্রিলোচনপুর ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মধুসুধন দত্ত জানান, নির্বাচনে নয়টি ভোটকেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম ঋতু আনারস প্রতীকে ৯ হাজার ৫৫৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের নজরুল ইসলাম ছানা পান ৪ হাজার ৫২৯ ভোট। ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৯ হাজার ৬০০ জন।
সত্যি কথা বলতে, নির্বাচন কী, তা বুঝিনি। এলাকার মানুষ আমাকে ভালোবেসে ভোটে দাঁড় করিয়েছেন।
নজরুল ইসলাম ঋতু, বিজয়ী চেয়ারম্যান, ত্রিলোচনপুর ইউপি, কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ
নজরুল ইসলাম ঋতু কালীগঞ্জে উপজেলার দাদপুর গ্রামের আবদুল কাদেরের সন্তান। তার আরও তিন ভাই ও তিন বোন রয়েছে। জন্মের পর হিজড়ার বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পাওয়ার পর পাঁচ বছর বয়সে তাঁকে গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় চলে যেতে হয়। সামান্য লেখাপড়া করলেও সামাজিক নানা প্রতিবন্ধকতায় প্রাথমিকের গণ্ডি পেরোনো সম্ভব হয়নি তাঁর। ছোটবেলা থেকেই ঢাকার ডেমরা এলাকায় তাঁর দলের গুরুমার কাছে বেড়ে ওঠেন। এখন তাঁর বয়স ৪৩ বছর।
ঢাকায় থাকলেও পরিবারের টানে প্রায়ই তিনি গ্রামের বাড়িতে আসেন। ১৫ বছর ধরে তিনি ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের অসহায় মানুষকে আর্থিক সহযোগিতা করে আসছেন। এভাবেই এলাকায় তাঁর পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।
নজরুল ইসলাম ঋতু বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, নির্বাচন কী, তা বুঝিনি। এলাকার মানুষ আমাকে ভালোবেসে ভোটে দাঁড় করিয়েছেন। আমার পরিবারের সবাই আওয়ামী লীগ করেন। আমি কখনো সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করিনি। ভোটে জয়ী হয়ে চেয়ারম্যান হয়েছি, এখন জীবনের বাকি সময় নিজ ইউনিয়নবাসীর সেবা করতে চাই।’
তিনি বলেন, নির্বাচনে তাঁকে নৌকার প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকেরা বাধা দিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসন কঠোর থাকায় সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। এতে তিনি নির্বাচনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি কৃতজ্ঞ।