মোঃ রাসেল ইসলাম,স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে কোটা বিরোধী আন্দোলকারীদের সাথে দফায় দফায় ছাত্রলীগের সদস্যদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপর আড়াইটা থেকে আন্দোলকারীরা সমবেত হতে থাকে। কয়েকঘন্টা চেষ্টার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। জানা যায়, দুপুর আড়াইটার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হয়। পরে তারা একটি মিছিল নিয়ে শহরের চৌরাস্তার দিকে অগ্রসর হলে অপরদিক থেকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীগণ আন্দোলনকারীদের উপর ধাওয়া দেয়।
এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পুলিশ এসে উভয় পক্ষকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরক্ষনেই আন্দোলনকারীদের সাথে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠে জড়ো হতে থাকে। এ সময় পুলিশ এসে আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলে শান্ত করার চেষ্টা করে। আন্দোলনকারীরা মাঠ থেকে বেরিয়ে মিছিল নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে যাওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ তাদের আটকিয়ে দেয়। কিন্তু তারা পুলিশ ব্যারিকেট ভেঙ্গে চৌরাস্তার দিকে অগ্রসর হয়। আবারও চৌরাস্তা থেকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ধাওয়া দিলে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন স্থানে অবস্থায় নেয়। আন্দোলনকারীদের একটি অংশ প্রাইমারী ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের সামনে অবস্থান নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে।
অপর একটি অংশ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনেসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। এ সময় চৌরাস্তা থেকে পুরাতন বাসষ্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল ও দোকানপাঠ কমপক্ষে ৩ ঘন্টা বন্ধ থাকে। উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তজনার সৃষ্টি হলে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার সেল, গ্যাস গান ইত্যাদি নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের পায় ৫০ জন আহত হয় এবং পুলিশ সদস্যরাও আহত হন বলে জানা যায়। এবং বলাকা ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর সামনে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ ছাত্রগণ অবস্থান নেয়। এমত অবস্থায় এক পুলিশ সদস্য মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার পথে আন্দোলনকারীরা বাধা দেয়, সেই বাধা অপেক্ষা করে যেতে চাইলে পরে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ ছাত্র গন মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করে। পরে বিকেল ৬টার দিকে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এবিএম ফিরোজ ওয়াহিদ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ভেতর হতে আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে তাদেরকে বের করে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
এদিকে সাবেক ছাত্র নেতা জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রিপন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কোটা আন্দোলকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও তারা উত্তেজিত হয়ে পরে এক পর্যায়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান রিপনকে সরিয়ে অফিস কক্ষে রাখেন। এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ থাকলেও বিকেল সাড়ে ৬টার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তিতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।