মোঃ রাসেল ইসলাম
স্টাফ রিপোর্টারঃ
উজানে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ১৯ সেন্টিমিটার বেড়ে কুড়িগ্রামের চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
৫ জুলাই ২৪ ইং জেলা প্রশাসন এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, কুড়িগ্রামের ৭২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৫টি ইউনিয়ন ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত। বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে ৪৫০টি চর। নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোও ভাসিয়ে নিচ্ছে বন্যার পানি।
এমন পরিস্থিতিতে ডুবে যাওয়া উত্তর মাঝেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো প্রায় একই রকম অবস্থা দাঁড়িয়েছে জেলার আরও ৩৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। ফলে এই বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ আছে।
উত্তর মাঝেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮০। পানি আসার আগেই বিদ্যালয়ের চেয়ার-টেবিল-বেঞ্চসহ অন্যান্য আসবাবপত্র নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে রাখা হয়েছে।
এই শিক্ষক বলছেন, প্রতিবছর বন্যার সময় একইরকম পরিস্থিতিতে পড়তে হয় তাদের। তবে অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবারের বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ বলে মনে হচ্ছে তার।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) নবেজ উদ্দিন সরকার ডেইলি স্টারকে জানান, কুড়িগ্রামে চর ও নদী তীরবর্তী এলাকায় মোট ২৮০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এগুলোর মধ্যে ৩৭টি স্কুলঘর পানিতে ডুবে গেছে। যেভাবে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে, তাতে আরও কিছু বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা আসতে পারে।
এদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কুড়িগ্রামের চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ফেরি চলাচল বন্ধ রাখায় ওই রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা চরম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছেন। বাধ্য হয়ে বেশি টাকা খরচ করে ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় চলাচল করছেন।
বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চিলমারী ঘাটের ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান ডেইলি স্টারকে বলেন, নদের পানি বেড়ে যাওয়ায় ফেরিঘাটের সংযাগ সড়ক ডুবে গেছে। এ কারনে বন্ধ রাখা হয়েছে এই রুটের ফেরি চলাচল।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান ডেইলি স্টারকে বলেন, ১৯ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।