খুলনার দাকোপ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত ইং ২৩ জুন রোজ বৃহস্পতিবার আনুমানিক দুপুর ১১টা ৫০ মিনিট। দাকোপ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রবেশ করে দেখা যায়,বেড ছাড়া অনেক রোগী হাসপাতালের ফ্লোরে এলোমেলো ভাবে পড়ে আছে। নেই কোন তাদের যত্ন,না পাচ্ছে সঠিক ভাবে সেবা। অবহেলায় অবহেলিত ভাবে পড়ে আছে।
নাই কারো তাদের প্রতি মানবতার দৃষ্টি।
ভর্তি রোগীদের একজন স্বজন দুঃখের সাথে কেঁদে জানালেন, নার্সদের অনেক বার ডাকাডাকি করলে তারপর আসে। তাও আবার, মেজাজ নিয়ে।
হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, নিচেয় যে সকল রোগী রয়েছে, তাদের বেশীর ভাগ ডায়রিয়া জনিত কারণে ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেড না থাকায়, এ বেড সংকটে পড়তে হচ্ছে রোগীদের।রোগীদের কাছ থেকে আরো জানা যায়,হাসপাতালের ভিতরে চরমভাবে নোংরা পরিবেশ। সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে যাবে মহত্ত্বের মধ্যে। হাসপাতালে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নের লোক নিয়োজিত থাকা শর্তেও দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়মিত লোকের দেখা মেলে না।এখানে শেষ নয়,দাকোপ হাসপাতালের সেবার কাহিনী। শুরু হল মাত্র। চরম নোংরা পরিবেশ বাথরুম,গোসলখানার। অন্য দিকে পানির ট্যাংক ও ট্যাপের ব্যবস্থা থাকলেও সঠিক ভাবে পানির সরবরাহ নাই। অকেজো হয়ে পড়ে আছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের পানি কিনে খেতে হয়। আবার অন্য দিকে আর একটি ঘটনা,মালির কাজে নিয়োজিত লোক থাকলেও বাগান পড়ে আছে অযত্নে। পরিষ্কার করা হয় না। কারণ মালির কাজের দায়িত্ববান কর্মকর্তা-কর্মচারী তিনি তো মালির মত নিচু কাজের যোগ্য ব্যাক্তি নয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আরো জানা যায়, এক বৃদ্ধ রোগীকে দিয়ে মাঝে মাঝে এই মালির কাজ করানো হয়। এমন অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, বৃদ্ধ ব্যাক্তিকে ওষুধ কিনে দেওয়ার কথা বলে,তাকে লোভ দিয়ে মালির কাজ করানো হয়।কিন্তু, দুঃখের বিষয় তাকে বাইরের ক্রয়কৃত ওষুধ না দিয়ে, সরকারি ওষুধ দিয়ে মন বুঝানো হয়।
দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরো খবর, দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও নার্সের পাশাপাশি বহিরাগত দের আনাগনা বেশি। এই বহিরাগতদের অতিষ্ঠ রোগীর স্বজনেরা।জানা যায়,বহিরাগতদের বাসা হাসপাতালের আশেপাশেই। বহিরাগতদের কাজ প্রতিনিয়ত রোগীদের জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া।রোগীদের মাঝ থেকে এমন অভিযোগ উঠে এসেছে।
দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা সরকারি কোন নিয়ম-নীতি মানছে না। তাহারা তাদের ইচ্ছা মতে অফিস করছে বলে অভিযোগ উঠে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সাংবাদিকরা গোপনে খোজ নিয়ে জানতে পারেন।আসলে দুর্নীতি আর অনিয়মে ছেয়ে গেছে।
ডাঃ সন্তোষ কুমার মজুমদার অফিস সময় রোগী দাড় করায় ফেসবুকে ব্যস্ত থাকেন। তিনি দু পা তুলে দেন অন্য একটি টুলের উপর। আরাম আর আরাম,না দেখলে বুঝা যাবে না ডাক্তারের ষ্টাইলটা কেমন।এটা নাকি এক দিনের ঘটনা নয়। এমন ভাবে তিনি প্রায় অফিসে রোগীর সামনে, সাংবাদিকের সামনে থাকেন।
ফেসবুক দেখতে দেখতে কোন এক সময় অপারেশনের রোগী আসে। এবার অপারেশনের রোগী আসলেই দৌড়। কারণ ওখানে টাকা।ফেসক্রিপশন বা ব্যবস্থাপত্র পড়ে থাকা টেবিলে পড়ে থাকে।ওনি চলে যান অপারেশন কক্ষে। পরে সময় চলে যায়,অপারেশন কক্ষে। আর রোগী গুলো অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে কখন ডাক্তার আসে। রোগী বসে বসে কেহ চলে যায়,আবার কেহ অপেক্ষায় থাকেন। বেলা ১টা ৩০ মিনিট গড়ি কাটায়। জানিয়ে দেওয়া হয়, স্যার এখন আর এখানে রোগী দেখবেন না। এবার টাকার খেলা। টাকা দিয়ে বাসায় দেখেন রোগী। আবার এদিকে অপারেশনের জন্য আগেই এক এক রোগীর সাথে চুক্তি করেন,এক এক রকমের মোটা অংকের টাকা। যেখানে বিপদে পড়তে হয় রোগীর স্বজনদের। উপায় না পেয়ে শুনতে হয় ডাক্তার নামের অমানুষ গুলোর কথা।
হয়তো ধার, সমিতি নয়তো, সুদের টাকার বিনিময়ে। আনতে হয় টাকা।
ডাক্তার সন্তোষ কুমার মজুমদারের অনুপস্থিতে অপারেশনের
চুক্তি করেন, তার পাশে থাকা গার্ড বা কম্পাউন্ডার গুলো।দাকোপ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে আরো জানা যায়, সকাল ১১টার আগে কোন ডাক্তার অফিসে আসেনা।
আর আসলেও ১১টার আগে কোন রোগী দেখেন না।অনেকে প্রেজেন্ট বা হাজিরা দিয়ে চলে যান, যার যার ব্যক্তিগত কাজে। এদিকে ডাক্তার মোজাম্মেল হক সাহেব, অফিসে আসলেও দু পা তুলে দেন টেবিলের উপর। বড় স্যার বলে কথা।
আর ওনি কোন রোগী দেখেন না। এক নার্সকে নিয়ে সামনের টেবিলে বসিয়ে রেখে কথা বলেন আর হাসাহাসি। এবং সেই নার্সই রোগী দেখেন।
অফিস সময় শেষ হতে না হতে আযানের আগে অফিস ত্যাগ করেন।
এরপর বাকি রোগী টাকার বিনিময়ে দেখেন। হাসপাতালের সামনে তার বিশাল চেম্বার। প্রতি রোগীকে ৩০০ থেকে ৪০০টাকা গুতে হয়।
তার কাছে সত্যায়িত বা কোন বিষয় নিয়ে স্বাক্ষর নিতে হলে ৫০০ টাকা দিতে হয়। আর টাকা না দিতে পারলে তার স্বাক্ষর হয় না।খুলনা সিভিল সার্জনের নিকট একটি বিষয় দাকোপ বাসির খুব জানার ইচ্ছা সরকারি ডাক্তার কত বছর কত দিন? একজন ডাক্তার একই হাসপাতালে থাকতে পারে? তার পাশাপাশি দাকোপ বাসির একটি দাবি একজন অপারেশনের জন্য বা সেবা দেওয়ার জন্যএক জন মহিলা ডাক্তার প্রয়োজন।
দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক গুলো বড় বিপাকে পড়েছে। এখন রোগী আর সামনের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের যায় না। তিনি রোগী চালনা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার কমপ্লেক্স পাঠান।কারণ ডাঃ সন্তোষ কুমার মজুমদার চালনা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার কমপ্লেক্সে শেয়ার রয়েছেন।
অন্য কোন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরিক্ষা নিরীক্ষা করলে তিনি দেখন না। তিনি বলেন, এসব জায়গায় ভাল রিপোর্ট আসে না। চালনা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডিজিটাল মেশিনারি ওখানে ভাল রিপোর্ট আসে।
তার দাবি রোগী আমার ক্লিনিকে যাবে এবং সেখান থেকে পরিক্ষা নিরীক্ষা করবে।
দাকোপ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনিয়ম গরীব অসহায় কেটে খাওয়া মানুষ,দিন মজুরি, জেলে, অসহায় রোগীদের জীবনে বড় প্রভাব ফেলছে।এদের দুঃখের শেষ নাই। তাই এ অনিয়মের বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হবার ও সচেতন মহলকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।