উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও গত কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নেত্রকোণার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও বারহাট্টাসহ ৬ টি উপজেলার ৩৯ টি ইউনিয়নের
বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যার ভয়াবহ রুপ দেখা দিয়েছে।
সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে পানিবন্দি হয়ে আছে লক্ষাধিক মানুষ।
ঢলের পানিতে অসংখ্য রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। অসংখ্য পুকুর তলিয়ে গেছে পানিতে, ভেসে গেছে মাছ। নেই কোনো বাড়িঘড়ের অস্তিত্ব।বাধ্য হয়েই জীবন বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় গ্রহণ করছেন তারা।
কলমাকান্দা উপজেলায় সরজমিনে দেখা যায়, এক মর্মান্তিক ভয়াবহ বন্যার চিত্র। হু হু করে বেড়েই চলেছে বন্যার পানি। বন্যায় প্লাবিত মানুষগুলা গৃহপালিত গরু -ছাগল নিয়ে কোনো রকম ভাবে আশ্রয় গ্রহণ করেছে স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে।
এছাড়াও কলমাকান্দা উপজেলায় বন্যার ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সম্পূর্ণভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থাও খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে।
চারদিকে ঘুরে দেখা যায়,কলমাকান্দা উপজেলার প্রধান সড়কগুলো ডুবে আছে। এছাড়াও চাঁনপুর, রাজাপুর,কলেজ রোড,কালীহালা,ডাইয়ারকান্দা,নাগ্নীপাড়া, বিশর পাশা,এতিমখানা,চিনাহালা,নাজিরপুর সহ উপজেলার প্রধান প্রধান রাস্তাগুলো সহ গ্রামগুলো বন্যায় প্লাবিত হয়ে আছে।গ্রাম গুলোর বেশির ভাগ মানুষই কলমাকান্দা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, কলমাকান্দা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কলমাকান্দা সরকারি কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আশ্রায়িত আছেন।
এ সময় বন্যায় প্লাবিত হওয়া মানুষগুলোর পাশে থাকা জনপ্রতিনিধিদের খুব জরুরী মনে করছেন তারা।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আব্দুল আহাদ খান জানান, থানা পুরোটাই পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বর্তমানে জেনারেটর এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বন্যার পরিস্থিতি আরও অবনতি হচ্ছে। বন্যায় বিপর্যস্ত মানুষদের উদ্ধার করতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আবুল হাসেম জানান,
উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রত্যেকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন কন্ট্রোল রুম এর মাধ্যমে প্রত্যেকটি ইউনিয়ন পর্যবেক্ষণে রয়েছে। শুকনো খাবার বিতরণ, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, আশ্রয় কেন্দ্র উন্মুক্ত সহ সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে তার পরিমাণ আরো বাড়াতে হবে বলে মনে করেন তিনি।