নেত্রকোণার প্রথম নারী জেলা প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত হচ্ছেন অঞ্জনা খান মজলিস। ২০০৩ সালে ২২তম বিসিএস প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন অঞ্জনা খান। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কশিনার কার্যালয় থেকে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। পরে তিনি ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। এরপর মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এবং পরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অঞ্জনা খান। পরে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপ-সচিব হন তিনি। এ পদে দায়িত্ব পালন শেষে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান অঞ্জনা খান। তাঁর জন্মস্থান সাভারের আনন্দপুরে। তাঁর বাবা এবং শ্বশুর দু’জনই সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। তাঁর স্বামীও একজন সরকারি কর্মকর্তা এবং মাতা শামীমা খান মজলিশ (গৃহিনী)। তাঁর একজন পুত্র সন্তান ও একজন কন্যা সন্তান রয়েছে। জানা যায়, ছাত্রজীবন থেকেই তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তিনি সাভার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে ১৯৯২ সালে স্টার মার্কসহ ১ম বিভাগে এস.এস.সি পাশ করেন। ১৯৯৪ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ও কলেজ হতে স্টার মার্ক সহ ১ম বিভাগে এইচ.এস.সি পাস করেন একই সাথে উক্ত কলেজে মেধার স্বার রাখার জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যের নিকট হতে উপচার্য পুরস্কার লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ২০০৩ সালে বি.সি.এস (প্রশাসন) ক্যাডারে যোগদান করেন। প্রশাসন ক্যাডারে যোগদানের পর থেকে তিনি অত্যন্ত সততা, সুনাম ও দতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বগুড়া ও চট্টগ্রাম জেলায় ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে আমলী আদালত ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। তিনি চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় তিনি জনপ্রতিনিধি, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও উন্নয়ন প্রশাসনে কাজ করার বাস্তব দতা অর্জন করেন। ফটিকছড়ি উপজেলায় কর্মকালীন সময়ে তিনি নবগঠিত ফটিকছড়ি পৌরসভায় ১ম পৌর প্রশাসক ছিলেন। তার সময়ই ফটিকছড়ি পৌরসভার সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা চুড়ান্তকরণ সহ সফল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বাংলাদেশ চা বোর্ডে উপসচিব হিসেবে প্রেষণে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি মানিকগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কাজ করেছেন। অতঃপর উপসচিব হিসেবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে কাজ করেছেন। তিনি ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারী থেকে চলতি বছরের ৩১ মে পর্যন্ত চাঁদপুর জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১লা জুন নেত্রকোণা জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করেছেন। বাংলাদেশের যে এলাকায় তিনি কাজ করেছেন সেই এলাকার জন মানুষের মনে তিনি সততা ও উদার মানবিকবোধ সম্পন্ন প্রশাসনিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তিনি দেশে ও দেশের বাইরে (জাপান, চীন ও ভারত) প্রশাসনিক বিষয়ে প্রশিণ গ্রহণ করেছেন। তিনি রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত কাজে থাইল্যান্ড, চীন, জাপান, ভারত, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও সৌদিআরব ভ্রমণ করেছেন। গত ১লা জুন তিনি নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।