সৈয়দপুর প্লাজা সুপার মার্কেটের ‘ফুড প্যালেস নামক ফাস্টফুড রেস্টুরেন্টে’র মালিক মাহিন আহমেদ প্রান্ত (২৮) আবারও আটক হয়েছে। এবারও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কপোত-কপোতির অসামাজিক কর্মকাণ্ডের দায়ে তাকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার (২৮ মে) দুপুর ৩ টায় সৈয়দপুর থানা পুলিশের কাছে সে ধরা পড়েছে। সে সৈয়দপুর শহরের চাঁদনগর এলাকার নূর মুহাম্মদের ছেলে। পরে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২০০ টাকা জরিমানার অর্থদণ্ড প্রদান করেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শামীম হুসাইন।
এদিকে ঘটনাস্থলে অপ্রীতিকর অবস্থায় সৈয়দপুর সেনানিবাসের বাংলাদেশ আর্মি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (BAUST) এর দুইজন শিক্ষার্থীকে পাওয়া যায়। তারা হলো সিরাজগঞ্জের মালসাপাড়ার আব্দুল আলিম খোকনের ছেলে জুলকার নাইন ও ফারহানা জান্নাত বৃষ্টি (অজ্ঞাত পরিচয়)।
সৈয়দপুর থানা সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর প্লাজা সুপার মার্কেটের ফাস্টফুড ও রেষ্টুরেন্টগুলোতে লাগাতার অসমাজিক কর্মকাণ্ড এবং আলোচিত ধর্ষণ ঘটনার প্রেক্ষিতে মামলার বিষয়ে নিয়মিত পর্যবেক্ষণের অংশ হিসেবে পুলিশ টহল দিচ্ছিল।
এমতাবস্থায় মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় উত্তর দিকের ‘ফুড প্যালেস ফাস্টফুড এন্ড রেষ্টুরেন্টে প্রবেশ করামাত্রই একটি কেবিনে দুইজন যুবক-যুবতীকে অপ্রীতিকর অবস্থায় অসামাজিক কার্যকলাপরত হাতে নাতে ধরে ফেলে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা সৈয়দপুর বাংলাদেশ আর্মি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী।
এরই এক ফাঁকে বৃষ্টি নামের ছাত্রীটি পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে নীলফামারী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) সারোয়ার আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জুলকারনাইন ও রেষ্টুরেন্ট মালিক মাহিন আহমেদ প্রান্তকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাত খান জানান, জুলকার নাইনকে থানা পুলিশ মুচলেকা নিয়ে BAUST, সৈয়দপুর কতৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছে এবং রেস্টুরেন্ট মালিক প্রান্তকে ভ্রাম্যমাণ আদালত তথা সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) অফিসে নেয়া হয়। সেখানে ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শামীম হুসাইন ২শ’ টাকা জরিমানা করে সাজা প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, একজন সনাতন (হিন্দু) ধর্মাবলম্বী কলেজ ছাত্রীকে কৌশলে ডেকে এনে উল্লেখিত রেষ্টুরেন্টে জোরপূর্বক ধর্ষণের ঘটনায় গত ৩১ মার্চ প্রান্তসহ দুবাই রেষ্টুরেন্টের মালিক ওয়াহিদ এবং ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশ। পরে এ সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। সেই মামলার জামিন নিয়ে বেড়িয়েই আবারও রেষ্টুরেন্টে অসামাজিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছে প্রান্ত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সৈয়দপুর প্লাজার কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, ঢাকায় একটি বেসরকারী টেলিভিশনের ঢাকাস্থ অফিসে কর্মরত একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকের ভাগিনা এবং ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় প্রান্ত সেই দাপটে অনেকটা ঘোষণা দিয়েই তার এই বেআইনি অসামাজিক কর্মকাণ্ড দেদারছে চালাচ্ছে।
তারা আরও বলেন, প্রান্তসহ কয়েকজন চিহ্নিত নোংরা মনের ব্যবসায়ীর কারণে প্লাজা মার্কেটের পরিবেশ চরমভাবে নষ্ট হয়ে পড়েছে। আমরা এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই। তাদের আশঙ্কা মুচলেকা দিলেও প্রান্ত ভিন্ননামে নতুন করে প্রতিষ্ঠান খুলে আবার এই কারবারে মেতে উঠবে। কারণ এভাবে লঘুদণ্ড তাকে আরও বেশি সাহসী করে তুলেছে।