যশোরের অভয়নগর উপজেলার একতারপুর গ্রামের রাসেদুল ইসলাম আলোচিত দক্ষিণ নড়াইলের আটঘরা গ্রামের প্রতিবন্ধী এক তরুনীকে ধর্ষনের দায়ে যশোরের শিশু সংশোধনাগারের জেলখানায় দীর্ঘ প্রায় ৩৮ দিন ধরে আটক রয়েছে। শিশুটির পিতা-হাফিজুর রহমান দাবি করেছেন, তার ছেলের কোন দোষ নেই। অন্যদিকে প্রতিবন্ধী কিশোরীর অর্থাৎ ভিকটিমের মা দাবি করেছেন মূল আসামী ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। এ দিকে এলাকায় রহস্য ঘনিভূত হতে চলেছে। দূরের আসামী কারাগারে আর এলাকার আসামী বাইরে থাকার বিষয় নিয়ে। ধর্ষনের বিষয়ে নড়াইল সদর থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯/১ ধারায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা নং-২০, তারিখ ১৮-০৪-২০২২। মামলার আরজি থেকে জানা গেছে, উত্তম কুমার শীল (৫৫), পিতা- দুলাল চন্দ্র শীল, মাতা-নিলা রানী শীল, এনআইডি- ৭৩৪৫১৫৫৯২৮ জন্ম তারিখ তারিখ- ০৭-১০-১৯৬৭ তিনি বাদী হয়ে নড়াইল থানায় রাশেদুল ইসলাম (১৬), পিতা- হাফিজুর রহমান, সাং-সুবলকাঠি, থানা- মনিরামপুর, জেলা- যশোর, বর্তমান সাং একতারপুর, থানা- অভয়নগর, জেলা-যশোর এর বিরুদ্ধে তার’ই কন্যা শারীরিক প্রতিবন্ধীকে গত ইং-১৭-০৪-২০২২ তারিখ বিকাল অনুমান ০৪.৩০ ঘটিকায় আটঘরা গ্রামস্থ অনুপ বিশ্বাস এর বাড়ীর পশ্চিম পার্শ্বে হরিশীতলা মন্দিরের বারান্দায় একাকী বসে থাকার সময় আসামী রাশেদুল ইসলাম মন্দিরে এসে তার মেয়েকে একা পেয়ে তার পিছন থেকে জাপটে ধরে এবং তার মুখ চেপে ধরে আটঘরা সাকিনস্থ অনুপ বিশ্বাসের বাড়ীর দক্ষিণ পাশে মেহগুনি বাগানের মধ্যে পরিত্যক্ত গর্তের মধ্যে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন করে। তিনি মামলায় আরো উল্লেখ করেছেন স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে আসামী দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করে। পরে আসামীকে গ্রেফতার পূর্বক নড়াইল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর ৯ /১ ধারায় জোর পূর্বক ধর্ষনের অপরাধে একটি মামলা দায়ের করা হয় মামলা নং-২০, তারিখ ১৮-০৪-২০২২। ভিকটিমের মা অভিযোগ করে বলেন, আসামী ৩ জন গ্রেফতার হলেও রাসেদুল বাদে বাকী দু জন আসামী কে ছেড়ে দেয় পুলিশ। পরে নড়াইলে বিজ্ঞ আদালত আসামী রাসেদুল কে যশোরের শিশু সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।সেই থেকে আসামী আটক রয়েছে। এদিকে অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে শিশু আসামী রাসেদুল ইসলামের সাথে দেখা করতে যশোরের চাচড়া পুলের হাটে অবস্থিত শিশু সংশোধনাগারে দেখা করে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় আটঘরা গ্রামের প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষনের সাথে সে জড়িত নেই বলে তার দাবি । দক্ষিন নড়াইলের বিছালী ইউনিয়নের আটঘরা গ্রামের ভিকটিমের মায়ের সাথে কথা বললে সে জানায়, মামলার স্বাক্ষী স্থানীয় মেম্বর জাহাঙ্গীরের পরামর্শে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভিকটিমকে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা প্রদান করেছেন। সে আরো জানায়, গ্রেফতার বাকী দুজন আসামী মেম্বর জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে গভীর রাতে নড়াইল সদরের বিছালী ক্যাম্প পুলিশ ছেড়ে দিয়েছিলো। এক প্রশ্নের জবাবে সে জানায়, ছেড়ে দেওয়া আসামীর নাম সকলে জানলেও তাদের পক্ষ থেকে বলা নিষেধ রয়েছে। তবে প্রকৃত আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় সে। ভিকটিমের পিতা মামলায় আসামী রাসেদুলের বয়স ১৬ বছর উল্লেখ করলেও তার টিকা কার্ড অনুযায়ী ৪-১০-২০০৭ সালে তার জন্ম। অন্যদিকে ভিকটিমের প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড-২০০৫৬৫১৭৬২৭০২০০১৯০৬ নং আইডি অনুযায়ী ভিকটিমের জন্ম তারিখ ১১-০৪-২০০৪। এলাকাবাসী প্রকৃত আসামী গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেছেন। এবিষয়ে ভিকটিমের পিতা উত্তম কুমার মুঠোফোনে জানান, ওই ছেলে রাশেদুলকে আমি চিনিনা ও জানিনা। ঘটনার সময় আমি বাড়ি ছিলামনা খবর পেয়ে বাড়ি আসি আমার মেয়ে বাক প্রতিবন্ধি সে কথা বলতে পারেনা। ঘটনা ঘটার পর মেয়ে বাড়িতে এসে ইশারায় আমার স্রীকে বলে। স্রী স্থানীয় মেম্বারকে ডেকে এই ঘটনা মেয়ের সাথে ঘটেছে জানালে, মেম্বার আমাদের অটোরিকশা ডেকে তুলে দেই। আমি মেয়েকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করি আসামি কি ভাবে ধরা পড়েছে আমি কিছু জানিনা। পরে নড়াইল থানার ওসি আমাকে বলে আসামি ধরা পড়েছে ঘটনার দিন আরো দুইজন ছেলেকে ধরে ওইদিন রাতেই তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া আমি আর কিছু জানিনা অপর এক প্রশ্নে তিনি জানান এই ঘটনার সব বিষয় মেম্বার জানে ওই ছেলে কি ভাবে আসামি হল। আমার মেয়েকে ওই ছেলের ছবি দেখালে সে ইশারায় শনাক্ত করে ঘটনার সাথে ওই ছেলে জড়িত। এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নড়াইল সদর থানার এসআই আসমত জানান, আসামিকে আমরা শনাক্ত করেছি ওই এলাকায় ঘুরাঘুরি করছিল ও আসামি নিজেও শিকার করেছে এবং ভিকটিম ওই আসামিকে ইশারায় শনাক্ত করেছে। দুই আসামি গ্রেফতার করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে তা তিনি অস্বীকার করেন।