দারিদ্রতা ও অস্বচ্ছলতার কারণে দুর্ঘটনায় পা
ভাঙ্গা মিজানুর রহমান স্ত্রী সন্তানদের মুখে দু মুঠো ভাত তুলে দেয়ার জন্য বেঁচে নিয়েছেন সংগ্রামী জীবন। বরিশালের বানারীপাড়ায় দুর্ঘটনায় পা
ভেঙে যাওয়া মিজানুর রহমান ডাক্তারী পরামর্শনুযায়ী বিশ্রাম নেয়াকে না মেনে নিজের ক্ষতির দিক না তাকিয়ে নামতে হয় রাস্তায় জীবিকা নির্বাহের জন্য। ফেরিঘাট সংলগ্ন স্থানে স্বচক্ষে দেখা যায় এক অটোরিক্সার ড্রাইভার পা ভাঙ্গা বেন্ডিস করা অবস্থায় তার নিজের অটোরিক্সায় যাত্রী উঠানোর জন্য আকুতি জানাতে। তার সাথে আলাপ কালীন অবস্থায় জানা যায় তার নামঃ মোঃ মিজানুর রহমান পিতা গনি বেপারী, বানারীপাড়া ৪নং ওয়ার্ডে বসবাস করেন এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে অটোরিক্সা (বৌগাড়ি) সাথে পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে দুর্ঘটনা ঘটে । দুর্ঘটনা ঘটার পরেই পিকআপ ভ্যানটি নিয়ে ভ্যান ড্রাইভার পালিয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় অন্য ড্রাইভারদের সাহায্যে বানারীপাড়া ৫০ শয্যা হসপিটালে তাকে তাৎক্ষণিক নিয়ে আসা হয়। অবস্থার অবনতি দেখে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়। শেবাচিম হাসপাতালে পায়ের অস্ত্রোপচার করা হয়। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী তিন মাসেরও বেশি বিশ্রাম থাকতে হবে । কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে পেটের দায়ে দেড় মাসের মাথায়ই পা ভাঙ্গা বেন্ডিস করা অবস্থায় মিজানকে নামতে হয় রাস্তায় । এ পর্যন্ত তার পা ভাঙ্গার চিকিৎসার জন্য ধার দেনা করে ৮০০০০ টাকা চলে গেছে। এখন পরিবারের অন্ন জোগাড় ও ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ যোগাতে তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাই বাধ্য হয়েই একপর্যায়ে মিজান রাস্তায় নেমে পড়েন তার অটো গাড়ি নিয়ে। এ বিষয়ে মিজান বলেন সংসারের অন্ন ও ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার খরচ যোগাতে এবং আমার ছেলে বরিশাল বি এম কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ে আর মেয়ে বানারীপাড়া কলেজে ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে ওদের পড়াশুনার ক্ষেত্রে বিশ্রামের দিকে না তাকিয়ে আমাকে নামতে হয়েছে রাস্তায়। আর সহযোগিতার ক্ষেত্রে পেয়েছি বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক এর কাছ থেকে ৫০০০ টাকা ও স্থানীয় ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গৌতম সমাদ্দারের কাছ থেকে ১০০০ টাকা। তাই আমি সমাজের রাজনৈতিক সামাজিক ও বিত্তবানদের কাছে আবেদন জানাই আমার ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার, সংসারের ও আমার চিকিৎসার জন্য এই অবস্থায় আমার প্রতি যেন একটু সদয় হয়। মিজান সম্পর্কে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড হসপিটালের ডাক্তার জান্নাতুন নাঈম মীম (এমবিবিএস)এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শরীরের ভাঙ্গা চোড়ার ক্ষেত্রে ভালো বিশ্রাম না নিলে ফ্যাকচার সম্পূর্ণ নিরাময় হয় না। অনেক সময় হাড়ের জোড়া লাগেনা। ভালো বিশ্রাম জয়েন্টের দৃঢ়তার উপর র্নিভর করে। ডাক্তারি ভাষায় হাড়ের মৃত্যু বা অ্যাভাসকুলার সমস্যা দেখা দেয়। অনেক সময় এটা বিকৃতির আকার ধারণ করে। এছাড়াও বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ বিষয়ে বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ গোলাম ফারুক বলেন, আমি তাৎক্ষণিক এই অবস্থায় মিজানুরকে কিছুটা হলেও সহযোগিতা করেছি। কিন্তু বর্তমানে তার পরিস্থিতি আমার জানা নেই। অবস্থা জেনে তাকে অবশ্যই সহযোগিতা করা হবে।