২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ| ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ| ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি| সকাল ৯:৩২| হেমন্তকাল|

উপন্যাসঃ শেষ রাতের আড্ডা ( পৃষ্ঠা নং- ১৪ )

সম্পাদক ও প্রকাশক
  • Update Time : শনিবার, এপ্রিল ১৬, ২০২২,
  • 31 Time View

এই মহিলাকে তুমি যতটা সরল মনে করেছ সে আসলে ততটা সরল নয়। তোমাকে এই বাড়িতে কাজের ছেলে বানিয়ে রাখবে। আর তুমি একজন ছেলে হয়ে কাপুরুষের মত কেন ঘরজামাই হয়ে এই বাড়িতে এমন অবহেলায় পড়ে থাকবে। আজ যদি তুমি ঘরজামাই না থাকতে তাহলে এই মহিলা কি তোমার সদ্য বিয়ে করা বউকে এ ভাবে আলাদা করে দিতে পারত। পুরুষ মানুষ ঘরজামাই থাকলে সে আর পুরুষ থাকেনা, সে হয়ে যাই বউ শাশুড়ির চাকরের মত। আলম বলল আমার ঘর বাড়ি নেই হেনাকে নিয়ে কোথায় রাখব ? মহামারীতে মা বাবা মারা যাবার পর পরেই নদী ভাঙ্গানে আমাদের ঘর বাড়ি সব বিলিন হয়ে যায়, আমি ছোটবেলা থেকেই মামার বাড়িতে বড় হয়েছি। মহসিন আলমকে মিথ্যে ভরসা দিয়ে বলল তুমি যদি আমার কথা মতন চল তাহলে বউ সম্পত্তি এবং ঘরজামাই থেকে মুক্তি সবি পাবে। এই সব ভুংভাং বুঝিয়ে মহসিন আলমকে তার কথায় নিয়ে আসল।
মহসিনের ইন্ধনে আলম প্রতিনিয়ত হেনাদের পরিবারে
তার উগ্রতার দাবদাহ বৃদ্ধি করতে থাকল। হেনার মা একটু ভরসা আর মানসিক স্বস্তির আশায় মেয়ের বিয়ে দিয়ে হিতে বিপরীতে যেন আশার কপালে ছাই মেরে রাবণের চিতা জ্বালালেন।
হঠাৎ একদিন তুমুল ঝগড়ায় আলম প্রচন্ড রাগে হেনাকে নিয়ে বেড়িয়ে গেল। হেনাও মায়ের শান্তি কামনায় আলমের সাথে বেড়িয়ে গেল। ঝুমা আর তার মা কোনো ভাবেই আলমকে আটকাতে পারল না।
আলম হেনাকে নিয়ে আর কোথাও যাবার রাস্তা না পেয়ে মামার বাড়িতেই উঠলে মামী তাদের দেখে তেমন খুশি হতে পারলেন না। হেনাকে এই ভাবে নিয়ে আসার কথা শুনে মামাও যেন একটু রাগ করলেন। পরের দিনেই হেনার মা আলমের রাগ ভাঙ্গিয়ে তাদের নিয়ে যেতে এলে আলম ফিরে যেতে রাজি হলেও মহসিনের কলকাঠিতে আলম তাদের পরিবারের চরম অশান্তি সৃষ্টি করে বলে হেনা মায়ের সাথে জেতে রাজি না হওয়ায় মা শূন্য মনেই বাড়ি ফিরে গেলেন।হেনা এক অজানা লক্ষ্যে তার জীবন তরী ভাসিয়ে দিয়ে তাদের সাথে সংসার জীবনের যাত্রা শুরু করল।
এরি মধ্যে এস.এস.সি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হল কিন্তু হেনা স্কুল জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তার স্থানটি আর ধরে রাখতে পারল না। সবাই বলাবলি করচ্ছিল যে
পরীক্ষার সময় তার বাবার মৃত্যু শোকে হয়ত সে পরীক্ষায় তেমন মনোযোগ দিতে পারেনি তাই তার রেজাল্ট এমন হয়েছে। কিন্তু এই রেজাল্টে হেনার মাঝে
সুখ দুখের তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা গেলনা।কেননা সে ভাবল এখন আর রেজাল্ট দিয়েই বা কি হবে, জীবনের সব স্বপ্ন গুলো ত আজ নিয়তির কাছে পরাজিত হয়ে গেছে। আলম বা মামা-মামী কাউকেই এই রেজাল্ট নিয়ে বিন্দু পরিমাণ আগ্রহ দেখাতে দেখা গেল না। তাদের পাশেই বা কি, আর ফেলেই বা কি,
পড়াশোনা করলেই বা কি, আর না করলেই বা কি, তাতে তাদের কিছু যাই আসে না। কারণ লেখাপড়ার প্রয়োজনীয়তার যে চেতনা তা মামা-মামী আর আলমের মাঝে ছিলনা বললেই চলে।
ফলাফল প্রকাশের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও হেনা আর পড়াশোনা করবে কিনা এই ব্যাপারে আলম তার নিজস্ব কোন মতামত জানাল না। কেবল বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছে আর বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্যে হেনার উপর চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category