২০ টাকা চাঁদা দিয়ে ব্রীজ পার হতে হয়েছে সড়কে চলাচলকারী ভ্যান চালকদেরও। সংবাদ প্রচার করায় সাংবাদিকের ওই সড়কে চলাচলে কতিপয় সন্ত্রাসীরা ফোনে একের পর এক দিচ্ছে নিষেধাজ্ঞা । এমনকি যেখানে পাবে সেখানেই শেষ করে ফেলবে বলে ফোনে হুমকি দিচ্ছে। নিরাপত্তা চেয়ে করা হয়েছে থানায় সাধারণ ডায়েরি।
ঘটনাটি ঘটে গত ১২ই এপ্রিল মঙ্গলবার বেলা ১২ ঘটিকার সময়। ঝিনাইদহ শহর থেকে মোটরসাইকেল যোগে সাংবাদিক তার পেশাগত দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে নলডাঙ্গা বাজার সড়কের যাত্রাপুর ব্রীজ নামক স্থানে পৌছালে সড়কে বেঞ্চ ফেলে করা হয় গতিরোধ। পাশাপাশি গাড়ি প্রতি ২০ টাকা চাঁদা দাবি করে কতিপয় ব্যক্তিগণ।
সেসময় কোন ভাবেই চাঁদা না দিয়ে ব্রীজ পার হওয়া যাবে না বলে জানানো হয়। কথা বলাবলির এক পর্যায়ে তুমুল কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সাথে কথা বলে প্রায় আঁধা ঘন্টা পর সেখান থেকে বের হতে সক্ষম হই। সেসময় অনেক অসহায় মানুষের থেকে চাঁদা নিতে দেখা যায় ওই চক্রটির। পরবর্তীতে একটু সামনে এসে দেখা মেলে এক শিশু ভ্যানচালকের সাথে।
তিনি নলডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা বলে জানায়। ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া এ শিশু শিক্ষার্থী স্কুলে না গিয়ে পরিবারের কিস্তির টাকা আয়ের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েছে বাবার অটোভ্যান নিয়ে। সেসময় দুই জন যাত্রী ভ্যানটিতে থাকতে দেখি। জানা যায় তার সর্বোচ্চ ভাড়া উঠবে ২০ থেকে ৩০ টাকা। তার মধ্যে ২০টাকা যদি তাকে চাঁদা দিতে হয় তাহলে বিষয়টি বিবেচনায় কি আসে।
যেই সব ভাইয়ের ১ম পর্বের নিউজে কমেন্ট লিখেছেন ঠিকাদার মাসুম মিয়া নির্বাচন করবে তাই সাংবাদিক একটি পক্ষ নিয়ে নিউজ করেছেন। বিষয়টি সেই ভাইদের কাছে বিবেচনার জন্য বলা হলো ঘটনার বিবরণে (আপনার বিবেক কি বলে)।
জানা যায়, ঝিনাইদহ এলজিইডির আরসিআইপি প্রজেক্টের বক্স কালভার্টের এই কাজটি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করে না গেলে সেখানে একটা বাইপাস রাস্তা থাকবে। কিন্তু বাইপাস রাস্তা উঠিয়ে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে ব্রীজের গ্যাপ এ নরম মাটি দিয়ে চলে যাওয়ায় ভারী যানবাহন চলাচলে সমস্যা দেখা যায়। চলাচলের সুবিধার্তে একটা শ্রমিক দিয়ে মাটি সমান ও মেরামত কাজ করার সুযোগে শ্রমিকের মজুরির কথা বলে শুরু করে চাঁদা আদায়। বিষয়টি নিয়ে এলাকার কতিপয় ব্যক্তি সড়কে বেঞ্চ ফেলে উঠাতে থাকে চাঁদা।
এ ঘটনা নিয়ে তাদের সাথে সমাধানের জন্য চেষ্টা করার কথা বললে সাংবাদিককে পড়তে হয় চাপের মুখে। কে শোনে কার কথা। বিষয়টি নিয়ে তাদেরকে একাধিকবার বুঝানোর চেষ্টা কালে বলা হয়। এটির দায়িত্ব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু কিছুতেই তা মানতে নারাজ। সেসময় উচ্চ কন্ঠে বলা হয় আপনি ডিসটাব করবেন না, আপনার কাজে আপনি যান। যা নিচের ভিডিওতে দেওয়া আছে। তাছাড়া বেরিগেড দিয়ে বের হতে গেলে অনেকের সাথে লাঞ্ছিত ঘটনা ঘটে। সেসময় অসহায় মানুষ গুলো নিরুপায় হয়ে টাকা দিয়ে ব্রীজ পার হতে দেখা যায়।
বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারকে অবগত করার চেষ্টা করা হলে সেখানেও বাধার সৃষ্টি করে অতি উৎসাহী জনতা। এরপর সংবাদ প্রচার করা হয়।
কিন্তু পরদিন বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় বিভিন্নভাবে হুমকি। এমনকি ৩টি মোবাইল নং থেকে দেওয়া হয় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, লাষ্ট ফোন কলটি দেয় এই চাদাঁবাজ চক্রের মূল হোতার কাছ থেকে। তিনি তার কথায় নিজেকে ভয়ংকর রূপে কথা বলতে থাকে। অবশ্য তিনি তার কথায় এখোনও আমাকে খুঁজছে। তার কথায় আরও বলা হয় ওই রাস্তা দিয়ে আমার চলাচলে দেওয়া হয় নিষেধাজ্ঞা। কেউ আবার আমাকে খুঁজছে বলে হুমকি দিচ্ছে ফোনে । হুমকির সুরে বোঝা যায় এর নেপথ্যে রাঘব বোয়ালের হাত বিদ্যমান। পরে বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা মহোদয়কে অবগত করা হলে তিনি সাধারণ ডায়েরি করতে বলেন এবং বিষয়টি তিনি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দেন।
এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, চলার পথে চাঁদা না দেওয়া? অসহায় মানুষসহ সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের কাছ থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায়ে বিকল্প সমাধানে সংবাদ প্রচার করা, এটাই কি অপরাধ? না ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পরিপূর্ণ কাজ শেষ না করে বাইপাস রাস্তা উঠিয়ে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চলাচলকারীদের ব্রীজের সাথে গ্যাপ অংশে পরিপূর্ণ মাটি না দিয়ে অতি উৎসাহীদের দাড় করিয়ে বেঞ্চ বসানো এবং চাঁদা আদায়?
এব্যাপারে জেলা এলজিইডি প্রোকৌশলীকে একাধিক বার মোবাইল নম্বরে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।