রাজনীতির বাহিরে সম্প্রতি দুটো ঘটনা ঘটে গেছে আমাদের। একটা লতা সমাদ্দারে টিপ কাণ্ড। অন্যটি হিজাব কাণ্ড। লতা সমাদ্দারের ঘটনায় আমাদের অনেক সেলিব্রিটি, সুশীল অনেক কথা বলেছেন। তারা লতা সমাদ্দারের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রতিবাদ স্বরূপ নিজ নিজ কপালে টিপ পর্যন্ত পরেছে। লতা সমাদ্দারের সাথে ঘটনাটি যদি সত্যি হয়ে থাকে আমার কোন আপত্তি নেই। কেননা, যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমি। যদিও টিপ পরে প্রতিবাদের বিপক্ষে আমি। কিন্তু আমি কি দেখলাম, লতা সমাদ্দারের ঘটনার সত্য মিথ্যা যাচাই না করে যে তারা প্রতিবাদ শুরু করলো। সংসদে তা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হলো। সেখানে, গতকাল যখন মুসলিম শিক্ষার্থীদের হিজাব পরিধান করায় হিন্দু শিক্ষিকা কর্তৃক ১৮ শিক্ষার্থীকে মারপিটের অভিযোগ উঠলো তখন সবাই নিশ্চুপ! এ কেমন মানবতা? এ কেমন প্রতিবাদী আমরা? আমি আরো লক্ষ্য করেছি, এই ঘটনাকে একটি পক্ষ ধামাচাপাসহ ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের বোকা বানানোর চেষ্টা করছে। আমি ঐ শিক্ষিকা এবং শিক্ষার্থীদের ইন্টারভিউ দেখেছি। সেখানে শিক্ষার্থীদের মারপিট করার যে অভিযোগ শিক্ষার্থীরা তা অকপটে স্বীকার করেছে। তাদের সাথে শিক্ষিকাও বিষয়টি স্বীকার করেছে। তবে, এখানে তারা স্বীকার করেছে ঠিক কিন্তু ছাত্র-শিক্ষক দূর্বলতার সুযোগে তারা ঘটনার মূল বিষয়টিকে সুকৌশলে এড়িয়ে যাচ্ছে। তারা বলতেছে, তারা হিজাবের জন্য তাদের পেটাইনি, পিটিয়েছে স্কুল ড্রেস পরিধান না করার জন্য। তাহলে এখানে কি দাঁড়ালো? কথাতো সেই একই। তবুও, যুক্তির খাতিরে আমি তাদের কথা মেনে নিলাম। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বলেছে তারা স্কুল ড্রেস না পরে আসার কারণ। তারা বলেছে, তাদের দ্বিতীয় ড্রেস নেই। একটি মাত্র ড্রেস ধুইয়ে দেয়ায় তারা তা পরতে পারেননি এবং তারা হিজাব/ ফর্মাল ড্রেস পরিধান করে স্কুলে এসেছেন। তাহলে আমার প্রশ্ন- ফর্মাল ড্রেস পরিধান করার কারণে কেন শিক্ষার্থীদের মারতে হবে? ড্রেস কি আমাদের সরকার, স্কুল কিংবা ঐ শিক্ষিকা বানিয়ে দিয়েছিল যে তুমি পরে আসলেনা কেন? তোমাদের স্কুল ড্রেস দিয়েছি এ ড্রেস ছাড়া স্কুলে আসা যাবেনা। পুরো সপ্তাহে একটা ড্রেস এটাতো স্বাভাবিক যে কেউ ধুইয়ে দিতে পারে! কিন্তু এর জন্য যদি শিক্ষার্থীদের মারা হয় তাহলে আমিতো মনে করি, এটি হিজাবের চেয়ে বড় অপরাধ। সুতরাং, এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন ।