দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উপহার হিসেবে গৃহীত ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পূনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত পাকা গৃহে প্রকৃত সুবিধা ভোগীকে রক্ষিত করে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অন্য মানুষকে গৃহে তুলে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা সহ প্রকল্পকাজটি প্রশ্নবিদ্ধ করার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
জানা যায়,গতকাল সোমবার উপজেলার আরাজি জাহাঙ্গীর পুর আশ্রয়ণে ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাকা ঘর বরাদ্দে অনিয়ম ও অর্থ লেনদেনের অভিযোগ নিয়ে নির্মিত গৃহে তালা ঝুলে ২নং ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের ডাঙ্গারহাট এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রের সম্মুখ সড়কে মানববন্ধন,অবস্থান কর্মসূচী ও প্রতিবাদ সভা করা হয়।সেখানে দিনাজপুর জেলা থেকে সাংবাদিক ও স্থানীয় গুটি কয়েক সাংবাদিকের উপস্থিতিতে কর্মসূচিগুলো পালন করা হয়।বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলার ইউএনও ও থানা ওসি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং দেখেন নির্মিত গৃহটি মেহেরজান নামে ১ মহিলা তার স্বামীর ঘর দাবী করে গৃহে তালা ঝুলিয়ে কর্মসূচী পালন করতেছে।এরপর একপর্যায়ে সেখানে সাংবাদিক ও কর্মসূচীতে থাকা ব্যাক্তির সাথে তর্ক বিতর্ক হয়।পরে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দেখা মিলে যে বয়স্ক মহিলা গৃহটি দাবী করেছে সেই বয়স্ক মহিলাটি পাশ্ববর্তী চিরিরবন্দর উপজেলায় স্বামীর জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে নির্মিত গৃহটি দাবী করেন এবং কর্মসূচীতে থাকা ব্যাক্তিদের বিষয়ে তদন্ত করলে খোজ মিলে তারা কেউই প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাকা বাড়ী পাওয়ার যোগ্য নয়।এরপর গৃহটির তালা ভেঙ্গে প্রকৃত ভূমিহীন ব্যাক্তির মাঝে গৃহটি হস্তান্তর করা হয়।ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পরেও কিছু স্থানীয় সাংবাদিক নিজের ফেইসবুক আইডিতে নিউজ প্রকাশ করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় নিউজ প্রকাশের জন্য পাঠিয়ে দেয়।কিন্তু বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় নিউজ প্রকাশ হওয়ার পরেও তারা তাদের নিজের ফেইসবুক আইডিতে নিউজগুলো প্রকাশ করতে ব্যার্থ হয়।এদিকে নিজ ফেইসবুক আইডি থেকে নিউজ করার কয়েক ঘন্টার পর নিউজটি সরিয়ে ফেলতে দেখা যায়।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়,খানসামা উপজেলার আরাজি জাহাঙ্গীর পুর গ্রামের মনছুর আলীর ছেলে আবু তালেব ও একই গ্রামের সুবত আলীর ছেলে আবু সাঈদ সহ কতিপয় ব্যাক্তি সু কৌশলে সরকারের বিরুদ্ধে একটি চক্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে গৃহীত ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত পাকা গৃহে প্রকৃত সুবিধা ভোগীকে বঞ্চিত করে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে অন্য মানুষকে তথা জনৈক মেহেরজান পিতা বেরান আলীকে নির্মিত গৃহে তুলে দেয়ার অভিযোগ হয়েছে।যার নিজ এলাকায় জমি রয়েছে ৮ শতাংশ।জনৈকা মেহেরজান পাশ্ববর্তী চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নে তার স্বামীর পরিচয় পত্র হওয়া সত্যেও বরাদ্দকৃত উপকারভোগীর নির্মিত গৃহে জোর পূর্বক প্রবেশ করান।বর্ণিত সিন্ডিকেটরা স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসন যাচাই বাছাই কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ করে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া ব্যাবহার করে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। যা কিনা সরকার বিরোধী কার্যক্রম হিসেবে প্রতীয়মান।
এ ঘটনায় উপরোক্ত ২ জন ব্যাক্তি সহ অজ্ঞাত ৪০ – ৫০ জন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে ২নং ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা শাহ মোঃ মোখতার হোসেন খানসামা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের কয়েক ঘন্টার পর পরেই খানসামা থানা পুলিশ সুবত আলীর ছেলে আবু সাঈদকে গ্রেফতার করে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়।
এবিষয়ে উপজেলা ইউএনও রাশিদা আক্তার বলেন, খানসামায় সরকার বিরোধী লোক প্রভাব বিস্তার করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাই সরকার এবং প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল।
এবিষয়ে খানসামা থানা ওসি কামাল হোসেন বলেন,অভিযোগ পাওয়ার পরে আরাজি জাহাঙ্গীর পুর গ্রামের সুবত আলীর ছেলে আবু সাঈদকে আটক করা হয় এবং ২নং ভেড়ভেড়ী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম বাবুলের মুচলেকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।