যশোরের কেশবপুরের বগা-শুড়িঘাটা অবৈধভাবে পশুর হাট বসিয়ে প্রতি মাসে অন্তত ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের একটি অংশ এতে জড়িত। ইজারার টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দেয়ায় সরকার যেমন রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি পশু কেনাবেচায় বাড়তি টাকা খরচ হচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতার। তবে অভিযুক্তরা এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, সপ্তাহে দুদিন খাস আদায় করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সপ্তাহের দুদিন বসা এ হাট থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ করা হয়েছে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল ইজারার টাকা নিজেদের পকেটে তুলছেন।হাটের রাজস্ব সরকারি তহবিলে জমা দেয়ার জন্য এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার ও রবিবার বগাই হাট বসে। বগা-সুড়িঘাটা বাজারটি জমজমাট হওয়ায় কপোতাক্ষ নদের ওপাড়ে মাত্র ২০০ গজ দূরে সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলায় সেনপুরে একই দিনে আরো একটি হাট বসানো হয়। সে কারণে এ বাজারের ইজারা কমে যায়। বগা এলাকবাসীর পক্ষে হাইকোর্টে মামলা করলে সেনপুর বাজারটি বন্ধ করার আদেশ দেয়া হয়। ফলে গত ৩ মার্চ থেকে বগা হাটটি পুনরায় জমজমাট হয়ে উঠেছে।উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা গেছে, নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সম্প্রতি ওই হাটের ইজারা দেয়া হয়। এলাকার রিপন হোসেন সাধারণ হাট ও পশুহাটসহ মাত্র ১৫ হাজার ১০১ টাকা মূল্যে হাটটি ইজারা নেন। কিন্তু শুধুমাত্র রবিবার ও বৃহস্পতিবার পশু হাট থেকে লক্ষাধিক টাকার ইজারা আদায় হচ্ছে। কিন্তু সেই ইজারা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না হয়ে ওই এলাকার প্রভাবাশালীরা নিজেদের পকেটে ভরছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাটে সপ্তাহের দুদিনে এক লাখ টাকার ইজারা উঠছে সেই টাকা রাজস্ব হিসেবে রাষ্ট্রীয় তহবিলে জমা দেয়ার জন্য এলাকবাসীর পক্ষে আব্দুল জলির সরদার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনারসহ বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেছেন।ইউপি চেয়ারম্যান তৌহিদুজ্জামান, উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক বাবর আলী, রিপন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা ইজারার টাকা ভাগ করে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পওয়া গেছে। হাটের ইজারা আদায়ের পাস বইতে চেয়ারম্যান তৌহিদুজ্জামানের নাম লিখে দেয়া হয়েছে।বীর মুক্তিযোদ্ধা তৌহিদুর রহমান বলেন, ১৫ হাজার টাকায় বছরে হাট কিনে তার থেকে বছরে কোটি টাকা আয় করা হবে এটা হতে পারে না। চেয়ারম্যানসহ তার অনুসারীরা টাকা ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। তিনি হাটের রাজস্ব খাস আদায়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।হাটের খাজনা আদায়কারী বাবর আলী বলেন, তারা যে হাট কিনেছেন সেখানে পশুহাটের নামে কিছু নেই। পশুহাটটি অল্প দিন শুরু হয়েছে। এখানে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার ইজারা আদায় হয়।
হাসানপুর ইউপি চেয়ারম্যান তৌহিদুজ্জামান জানান, কেশবপুরের স্বার্থে হাটটি চলছে। এখান থেকে যে টাকা আদায় হচ্ছে তা দলের নেতা কর্মীদের মাঝে ভাগ করে দেয়া হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন জানিয়েছেন, সাপ্তাহিক দুদিন খাস আদায় করা যায় কিনা সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।