২৭শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| ১২ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ| ৯ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি| বিকাল ৫:৫২| শরৎকাল|
Title :
টাঙ্গাইলে দেবী দূর্গার নবমী ও দশমী পূজা অনুষ্ঠিত নাগরপুরে পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে উপজেলা বিএনপি’র প্রভাবশালী নেতা মীর আবুল কালাম আজাদ রতন নাগরপুর উপজেলা বিএনপি’র উদ্যোগে বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন নাগরপুরে শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব’২৪ টাঙ্গাইলের বিভিন্ন পূজা মন্ডপে দেবী দুর্গার মহাঅষ্টমী পূজা অনুষ্ঠিত শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছায় নাগরপুর উপজেলা বিএনপি শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা জানালো নাগরপুর উপজেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সরকারি সফরের দ্বিতীয় দিনে দেলদুয়ারে খামারীদের সাথে মত বিনিময় করলেন উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার পূর্বধলায় জৈব বালাইনাশক সেন্টারের উদ্বোধন যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মাধ‍্যমে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব’২৪

কটিয়াদীর ঢাকির হাটে, ঢাকঢোলের তালে তালেফিরেছে

ধ্রুব রঞ্জন দাস, (১১ অক্টোবর ) কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
  • Update Time : সোমবার, অক্টোবর ১১, ২০২১,
  • 68 Time View

কেউ এসেছেন মুন্সিগঞ্জ থেকে। কেউ মানিকগঞ্জ আবার কেউ নরসিংদী থেকে। চতুর্থীর দিন (শনিবার) থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার থেকে ঢাকি ও বাদ্যযন্ত্র বাদকরা এসেছেন কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীর ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঢাকের হাটে। আজ সোমবার (১১ অক্টোবর) হাটের শেষ দিনেও ঢাকের বাদ্যে মেতেছে এ হাট। গত বছর করোনার কারণে অনেক ঢাকির বায়না জুটেনি। এবার সেই খরা কাটিয়ে, ভালো বায়না পেয়ে তাদের মুখে হাসি ফিরেছে।

পূজায় বাড়ি থাকা হয় না তাদের। পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করে পুজো কাটানোর অভিজ্ঞতাটা কেমন তা প্রায় ভুলতে বসেছেন তাঁরা। ঢাকের আওয়াজে যখন সবাই পরিবারের সঙ্গে আনন্দে মশগুল, তখন তাঁরা বাড়ি থেকে অনেক দূরে কোনও অচেনা পরিবেশে মন্ডপে মন্ডপে ঢাক বাজাতে ব্যস্ত। সেই ঢাকিরা এবার হাটে কাঙ্খিত বায়না পাওয়াই তাদের ঢাকের বোলে তাল ফিরেছে।

ঢাকের বাজনা ছাড়া দুর্গাপূজা অসম্পূর্ণ। মহাষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত আবাহন, বরণ, আরতি ও বিসর্জন সবক্ষেত্রেই চাই ঢাকের আওয়াজ। শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে কটিয়াদীর পৌর এলাকার পুরাণ বাজারে প্রতি বছর বসে ব্যতিক্রমী ঢাকের হাট। জনশ্রুতি আছে, ১৬শ শতাব্দীর প্রথমভাগে স্থানীয় সামন্ত রাজা নবরঙ্গ রায়ের হাত ধরে এই ঢাকের হাটের সূচনা। নাম ঢাকের হাট হলেও, এখানে ঢাক বা কোন বাদ্যযন্ত্র কেনাবেচা হয় না। বাদ্যযন্ত্র বাদকেরা অর্থের বিনিময়ে কেবল পূজা চলাকালীন আয়োজকদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। কার চুক্তিমূল্য কত হবে, তা নির্ধারণ হয় ঢাকিদের দক্ষতার ওপর। পুজো কমিটির কর্তারা যাচাই করে নেন ঢাকিদের পারফরম্যান্স।

শুধু ঢাক নয়, কাঁসি, সানাই, করতাল, খঞ্জরি, মঞ্জরিসহ নানা জাতের বাঁশি বাদকেরাও সমবেত হন এই হাটে। সোমবার হাটের শেষ দিন সরেজমিনে ঘুরে, ঢাকিদের চোখে-মুখে দেখা গেছে আশা-প্রত্যাশা-আনন্দের ছবি। হাটে একটি ঢাক ১৫-২০ হাজার টাকা, ঢোল ৮-১০ হাজার টাকা, ব্যান্ডপার্টি ছোট (৫ জনের) ৫০-৭০ হাজার টাকায় পর্যন্ত বায়না হচ্ছে।
কথা হয় মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুর থেকে আসা ঢাকি ঝন্টু দাসের সঙ্গে। তিনি বলেন, পূজায় সবাই আনন্দ করে। কিন্তু আমাদের চলে আসতে হয় পরিবার ছেড়ে। বংশপরস্পরায় এটি হয়ে এসেছে। নিজের পরিবারের মুখে হাসি ফোঁটাতে চলে আসি এই হাটে। আশা ঢাক বাজিয়ে পরিবারের জন্য নতুন কাপড় নিয়ে যাওয়ার। এবার হাটে ভালো টাকা বায়না পেয়েছি।
নেত্রকোনার কালীপদ পাল জানান, এই হাট থেকে প্রতিবছরই দুর্গাপূজার জন্য ঢাক-ঢোল বায়না করে নিয়ে যায়। এবারও এসেছি। ২৫ হাজার টাকা বায়নায় ১টি ঢাক ও ১টি ঢোল নিয়ে মন্ডপে ফিরছি।

কটিয়াদী উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দিলীপ কুমার সাহা জানান, এই ঢাকের হাটে প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েকশো ঢাকি ও বাদ্য বাদকরা আসে। এটি দেশের একমাত্র ঢাকের হাট। আমরা ঢাকি ও যারা বায়না করতে আসে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করে থাকি।

হাটের শেষ দিনে ঢাক-ঢাকি, আয়োজক সকলেরই যেন একই সুর-স্বর ‘আসছে বছর আবার হবে’।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category